হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজে সাড়ে চার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সহকারী শাহ মো. আব্দুল বশির ও ক্যাশিয়ার বাবুল মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার সকালে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মাসুদুল হাসান এতথ্য নিশ্চিত করে জানান, বুধবার এই বরখাস্তের চিঠি দেন অধিদপ্তরের সাধারণ প্রশাসন শাখার উপ পরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস।
আব্দুল বশির ও বাবুল মিয়ার বরখাস্তের আদেশ কার্যকর হবে ২০১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে। এক্ষেত্রে এ দুজনের চার বছরের বেতনের অর্ধেক টাকা জমা দিতে হবে সরকারি কোষাগারে। এর আগে ২০১৯ সালে বরখাস্ত হয়েছিলেন কলেজটির সাবেক অধ্যক্ষ বিজিত ভট্টাচার্য্য। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলা চলমান।
জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের পদে কর্মরত ছিলেন বিজিত ভট্টাচার্য্য। এ সময় ৫টি খাতে কলেজের সাড়ে ৪ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পরে ২০১৪ সালে অধ্যাপক বদরুজ্জামান চৌধুরী অধ্যক্ষের পদে যোগ দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩১টি খাতে ২ কোটি ৯৪ লাখ ১৮১ টাকা আদায় করা হয়। কিন্তু ব্যাংকে জমা ছিল মাত্র ১১ লাখ ১২ হাজার ৮১৩ টাকা। একই সময়ের মধ্যে ব্যাংকে লেনদেন হয় ১ কোটি ৬৫ লাখ ১২ হাজার ৯৫৭ টাকা। যার মধ্যে ১ কোটি ১৮ লাখ ৪১১ টাকা ব্যাংক হিসেবে স্থিতি থাকার কথা থাকলেও তা ছিল না। হদিস পাওয়া যায়নি কলেজের ১ কোটি ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪১১ টাকার। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ১ কোটি ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪১১ টাকা জমা না দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয় বলে প্রতিবেদন জমা দেয়।
এরপর ২০১৯ সালে এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করে দুদক। পরে সংস্থাটির পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ বিজিত ভট্টাচার্য্য, প্রধান সহকারী শাহ মো. আব্দুল বশির ও ক্যাশিয়ার বাবুল মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হলে অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করা হয়। দুদকের এ মামলাটি এখন সিলেটের বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন।