টাঙ্গাইলের সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থী শিহাব মিয়াকে হত্যা মামলায় ওই স্কুলের এক শিক্ষককে মঙ্গলবার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শিক্ষকের নাম আবু বক্কর (৩৫)। তিনি সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের আবাসিক শিক্ষক। রোববার রাতে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
শিহাবের মা আসমা আক্তার বাদি হয়ে সোমবার আবু বক্করকে প্রধান আসামী করে ৬ জন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত আরও আট-দশ জনকে আসামী করা হয়।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, মামলা দায়েরের পর আবু বক্করকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানভীর আহমেদ বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান ৭ দিনের রিমান্ড চান। শুনানী শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. শামসুল আলম ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ জুন শহরের বিশ্বাস বেতকা সুপারি বাগান এলাকার সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের ছাত্রাবাস থেকে ৫ম শ্রেণীর ছাত্র শিহাবের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষকরা তার মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
শিহাব সখীপুর উপজেলার বেরবাড়ী গ্রামের প্রবাসী ইলিয়াস হোসেনের ছেলে। শিহাবকে চার মাস আগে সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলে ভর্তি করা হয়। সে সুপারি বাগান এলাকায় ওই স্কুলের একটি ছাত্রাবাসে সপ্তম তলায় থাকতো।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মর্গে শিহাবের ময়না তদন্ত হয়। শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে সহকারি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম মিয়ার নেতৃত্বে তিন সদস্যের চিকিৎসক দল শিহাবের ময়না তদন্ত করেন। গত রোববার টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠান। শিহাবকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
শিহাবের মরদেহ উদ্ধারের পর মৃত্যুর কারণ ও হত্যায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে টাঙ্গাইল এবং ঢাকায় মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরেও শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে শিহাব হত্যার বিচারের দাবিতে জেলা ছাত্রলীগ সমাবেশ করেছে।
