ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈলে নির্বাচনী সহিংসতায় পৃথক ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও দুই সহকারী পুলিশ উপপরিদর্শক (এএসআই) বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে অজ্ঞাতনামা সাড়ে ছয় শতাধিক জনের নামে মামলা করা হয়েছে। আর অজ্ঞাতনামা মামলায় গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছে ওই এলাকার পরিবারগুলো। অধিকাংশ পুরুষেরা ছেড়েছেন ঘরবাড়ি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মামলার কথা শুনে বাড়ি ছেড়েছে অনেক পুরুষ। গ্রেফতার আতঙ্কে সময় পার করছে বাড়ির নারী ও শিশুরা। বাসায় কিছুক্ষণ সময়ের জন্য আসলেও একটু পরে বাড়ি ছাড়ছেন পুরুষেরা। অজ্ঞাতনামা মামলার কথা শুনে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে সে গ্রামে।
মীরডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা মনসুরা বেগম বলেন, আমরা শুনেছি যে মামলা হয়ছে। তাও আবার সাতশো আটশো মানুষের নামে। যেহেতু নাম উল্লেখ্য করে মামলা হয়নি সে কারনে ভয়ে সময় পার করছি আমরা। বাবুর বাবাকে আমি বাড়িতে থাকতে দেই না। বলা যায়না কাকে কখন তুলে নিয়ে যায় মামলায় নাম দেয়।
আরেক বাসিন্দা সুরাইয়া আক্তার বলেন, আমার ছোট তিনটা বাচ্চা আর স্বামী নিয়ে সংসার। মামলা আর গ্রেফতারের ভয়ে স্বামী বাড়িতে থাকছেননা। আমরা নির্বাচনের ঘটনার দিন ছিলামনা। ভোট দিয়ে আমরা চলে এসেছি। পরে ঘটনাও আমরা যায়নি। এখন মামলা হয়ছে অনেক জনের নামে। এ নিয়ে আমরা অনেক ভয়ে আছি।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল বলেন, আমরা দিনমজুর মানুষ। দিন আনে দিনে খায়। একদিন কাজ না করলে না খেয়ে থাকতে হয়। এখন অনেকজনের নামে অজ্ঞাত নামা মামলা হয়েছে। আমি নিজেই অনেক ভয় আছি। কাকে কখন তুলে নিয়ে যায় বলা যায়না। আমরা এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।
উল্লেখ্য, রাণীশংকৈল উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গ্রহন শেষে ফলাফল ঘোষনাকে কেন্দ্র করে বাচোর ইউনিয়নের ভাংবাড়ি ভি.এফ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষ বাধে। এসময় পুলিশের গুলিতে এক শিশু নিহত হয়। সেদিনের সেই ঘটনায় পুলিশ ও প্রিসাইডিং অফিসার বাদি হয়ে তিনটি মামলা করে। মামলাগুলোতে ৬শত জনকে অজ্ঞাতনামা করে মামলা করা হয়।
মামলার বিষয়ে রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাহিদ ইকবাল বলেন, তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতনামা ছয় শতাধিক জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর আমি বলে দিয়েছি কোন সাধারণ মানুষ এতে হয়রানি হবেনা। অতএব কেউ ভয় পাবেননা। শুধুমাত্র দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।