ঢাকা, সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩রা অগ্রহায়ণ ১৪৩১

তাহিরপুরে সম্প্রীতির মিলনমেলা শুরু

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : রবিবার ১৯ মার্চ ২০২৩ ০৫:২২:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন



সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে সীমান্তে হযরত শাহ আরেফিন (র.) ওরশ মোবারক ও পণাতীর্থ গঙ্গাস্নান ধামে লাখো হিন্দু-মুসলমানের মিলনমেলা জমে উঠেছে। রবিবার সকাল থেকে মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনদিন ব্যাপি হিন্দু- মুসলমানের মধ্যে সম্প্রীতির ওই মিলনমেলা শুরু হয়েছে।
রবিবার সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ওরশ প্রাঙ্গণ ও বারুণী মেলা প্রাঙ্গনে পাগল, ফকির, ঠাকুর, আশেকান, ভক্তরা দলে দলে আসছেন। এবার ভিনদেশী দর্শনার্থী ও পুণ্যার্থীদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। ধারণা করা হচ্ছে, এবার শাহ আরেফিন (র.) প্রাঙ্গন এবং পণাতীর্থ গঙ্গাস্নান ধামে প্রায় ৫ লাখ মানুষের সমাগম হবে। সীমান্তবর্তী লাউড়েরগড় সাহিদাবাদের হযরত শাহ আরেফিন (র.) আস্থানা ও রাজারগাঁও শ্রী অদ্বৈত প্রভুর জন্মধাম সংলগ্ন (পণতীর্থ ধাম) যাদুকাটা নদীর তীরে এই মিলনমেলা বসেছে। সারা দেশ থেকে লাখ লাখ ভক্ত ওরশ ও স্নানযাত্রা উৎসবে যোগ দিতে ওরশ প্রাঙ্গণ, অদ্বৈত প্রভুর আখড়া বাড়ি, গড়কাটি ইসকন মন্দির, হাট-বাজার, স্থানীয় গ্রামগুলোতে বৃষ্টির মধ্যে উপচেপড়া ভিড় করছেন।

হযরত শাহ আরেফিন (র.) আস্তানার সহসভাপতি, বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন জানান, ভারতের সীমান্তবর্তী বাংলাদেশ অভ্যন্তরে ৭১৮ বছরেরও অধিক সময় ধরে এখানে এই ওরশ উৎসব চলে আসছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও হযরত শাহজালাল (র.) ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সফরসঙ্গী হযরত শাহ আরেফিন (র.) আস্থানায় বার্ষিক ওরস উদযাপনের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রবিবার সকালে মাহফিলের মাধ্যমে শুরু হয়ে মঙ্গলবার আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে এ ওরশ উৎসব শেষ হবে। গত এক সপ্তাহ আগ থেকে ওরশে যোগ দিতে হাজারো কাফেলাধারী ভক্ত সমবেত হয়েছেন আস্থানা প্রাঙ্গনে। ওরশ উপলক্ষে আস্থানার আশ-পাশে বসেছে নানা বাহারীর খেলনার দোকান।

এদিকে বাদাঘাট ইউনিয়নের রাজাগাঁও শ্রী শ্রী অদ্বৈত প্রভুর জন্মধাম পরিচালনা কমিটির সভাপতি, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, প্রাচীন ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী ৭১৮ বছরেরও অধিক সময় ধরে মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা রাজারগাঁও শ্রী অদ্বৈত জন্মধাম সংলগ্ন যাদুকাটা নদীর পণতীর্থ ধামে মঙ্গল আরতির মাধ্যমে স্নাননযাত্রা অনুষ্টিত হয়ে আসছে। এবারও রবিবার রাত ৯টার দিকে স্নানযাত্রা মহোৎসব শুরু হবে এবং ভোরে পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে বার্ষিক স্নানযাত্রা উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। এ বছর স্নানযাত্রার মুখ্য সময় নির্ধারিত হয়েছে ৪ চৈত্র, ১৯ মার্চ রবিবার মহাগঙ্গা স্নান: রাত ০৯/৪৫/১৫গতে রাত ৪/ ০৬/ ৫০ পর্যন্ত।

তাহিরপুর থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন জানান, ওরশ ও স্নানযাত্রা উৎসবকে ঘিরে ওরশ স্থল, অদ্বৈত প্রভুর আখড়াবাড়ি, যাদুকাটা নদীর বারুণী মেলা স্থল ও গড়কাটি ইসকন মন্দিরে দেশী বিদেশী ভক্তবৃন্ধ ও দর্শনার্থী এবং পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় শনিবার সকাল থেকেই থানার পুলিশ ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও সড়কে চার স্তরের কড়া নিরাপ্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা বলেন, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে তিনজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটরে মাধ্যমে ভ্রাম্যমান আদালত সর্বদাই প্রস্তুত রয়েছে। যেকোনও ধরণের অপতৎপরতা প্রতিরোধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।