পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেছেন, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এখন থেকে এই সংগঠনটি সম্পন্ন নিষিদ্ধ। ছাত্রলীগের হয়ে যদি কেউ কখনও মিছিল করে বা ছাত্রলীগ যদি মিছিল করে সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেপ্তার করা হবে।
শনিবার দুপুরে রংপুরে এক সুধী সমাবেশে আইজিপি এসব কথা বলেন। রংপুর মহানগর পুলিশের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
আইজিপি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হামলা, হত্যা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি করা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাই পরবর্তীতে বিসিএস দিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে পুলিশে এসে পুলিশ বাহিনীকে বিতর্কিত করেছে। তাদেরকে পুলিশ বাহিনীতে এনে বাজে সংস্কৃতি চর্চা করা হয়েছে, সেটি দ্রুতই সংস্কার করা হবে।
ময়নুল ইসলাম বলেন, অতীতে অনেক রাজনীতিবিদ পুলিশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। আবার যখন ছাত্রলীগ পুলিশে এসেছে উল্টো তারাও আবার রাজনীতিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। এই চর্চা বন্ধ করতে হবে। কেউ রাজনীতি করতে চাইলে পুলিশের চাকরি ছেড়ে দিয়ে করুন।
ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জড়িত পুলিশের সদস্যদের বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। এখন পর্যন্ত ২১ পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ সময় পুলিশকে প্রতিপক্ষ না ভাবার অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, পুলিশ জনগণের বন্ধু হতে চায়। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি আস্থার জায়গাটা ফিরিয়ে আনার। পুলিশের গুটিকয়েক সদস্যের কারণে পুরো বাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থাটা উঠে যাক, সেটাও আমরা চাই না।
সুধী সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘অনেক পুলিশ সদস্য অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ না করে কোনো কোনো দলের হয়ে নিজেদের উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছে। এক দল ক্ষমতায় এসে বাকি দলকে শোষণ করবে এমন বাংলাদেশ আমরা চাই না।’ বিগত তিনটি সংসদের সব সদস্য ফ্যাসিবাদের দোসর বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে আইজিপি ময়নুল ইসলাম আবু সাঈদের গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর জাফরপাড়ায় যান। তিনি আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।
বায়ান্ন/একে