ঢাকা, শুক্রবার ৩ মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১

পাখির খামার করে লাখোপতি তামিম

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : বুধবার ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ০৪:২৬:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর


ছোট থেকেই পাখির প্রতি খুব দূর্বল তামিম আহমেদের (২৯)। অবসরে পাখির সাথে ছিল সময় অতিবাহিত করা। চার বছর আগে খাঁচার পোষাপাখি লাভবার্ডের সঙ্গে তার পথচলা। প্রথমে শখ থাকলেও এখন তা আয়ের উৎসে পরিনত হয়েছে। এলাকায় সবাই চেনেন পাখি তামিম নামে।

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল পৌর শহরের মোকশেদ আলীর ছেলে তামিম আহমেদ। সে রানীশংকৈল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। নতুন উপজেলা কমিটির সভাপতি প্রার্থী তামিম। তার এমন চমকে পাখি চাষে আগ্রহী হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ। তার পাখির খামার দেখতে প্রতিদিন আসছেন পাখিপ্রেমীরা, কিনছেন পাখিও।

বাসার কাছে আসতেই শোনা গেল পাখির কলরব। ছাঁদে গিয়ে আটকে গেল চোখ। সুন্দর পরিচ্ছন্নভাবে সাজানো পাখির খাঁচা। নানা প্রজাতির অসংখ্য লাভবার্ড, কাকাতুয়া, ফিন্স, দেশি বিদেশী কবুতর সহ বিভিন্ন পাখি। আর এসব পাখিগুলোর মধ্যে কেউ উড়াউড়ি করছে। কেউবা বানাচ্ছে বাসা। মনরোম সব দৃশ্য দেখতে অনেকে আসছেন পাখির খামারে। প্রথমে শখ থাকলেও এখন তার এই পাখির খামার যেন একটি আয়ের উৎস। পাখির এই খামারের পাশাপাশি নিজস্ব পুকুরেও মাছ চাষ করেন তামিম।

পাখি কিনতে এসেছেন আনারুল ইসলাম সহ বেশ কয়েকজন। তারা বলেন, শুনেছিলাম তামিম ভাইয়ের এই পাখির খামারে বাজিগার পাখি আছে। তাই নিতে এসেছি। তবে তার পাখির খামারটি দেখে অনেক ভালো লাগলো। অনেক রকমের পাখি আছে এখানে।

খামার দেখতে আসা রাকিব আহমেদ বলেন, পাখির কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখার পর আজ সরাসরি দেখতে এসেছি। দেখে খুব ভালো লাগলো, আমি বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ নিলাম। আমিও আমাদের বাসায় এমন একটি পাখির খামার করব।

পাখিপ্রেমী তামিম হোসেন বলেন, ছোট থেকেই পাখির প্রতি ভালোবাসা ছিল। সে ভালোবাসা থেকেই পাখির খামার করা। আমি প্রথম অল্প পরিসরে এই খামার করে থাকি। এক সময়ের শখ আজ আমার একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। আশা করি আগামীতে আরো বড় পরিসরে করবো পাখির খামারটি। ২০১৪ সালে প্রথম দুটি বাজরিগার পাখি নিয়ে বাসার ছাঁদে একটি খাচায় রাখি। পরে সেই পাখি বাঁচ্চা দিলে সেটিকে বড় পরিসরে করার চিন্তা করি। ২০১৮ সালের বগুড়া থেকে ১৮ জোড়া পাখি বাসায় কিনে নিয়ে এসে ছাঁদে একটি পাখির সেট তৈরী করি। কিছুদিন যাওয়ার পর পাখিগুলো ডিম দেয়া শুরু করে। তারপর ক্রমশ পাখির সংখ্যা বাড়তে থাকে। এখন ৫০ জোড়ারও অধিক পাখি আছে আমার খামারে। খামারটি করতে খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকার মতো। প্রতিমাসে তিন হাজার টাকার মত লাভ আসে খরচ বাদ দিয়ে। বিগত চার বছরে লাখ টাকার বেশী আয় করেছি। প্রতিদিন কাউন, ভাত, খিচুড়ি, কুসুম দানা, কাঁচা বুট, সবজি এসব খাবার হিসেবে দেয়। এটিকে আরো বড় করার চিন্তা ভাবনা আছে। সেই সাথে এখানে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চায়।

রাণীশংকৈল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মৌসুমী আক্তার বলেন, তার খামার সম্পর্কে আমরা অবগত রয়েছি। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে তার পাখির খামারকে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য সহযোগিতা করব।