ভর্তি চলছে’, ‘রোগ বিশেষজ্ঞ’, ‘কাজী অফিস’, ‘নার্সিং হোম’ ঈদ মোবারক শুভেচ্ছা বার্তা,রাজনৈতিক ব্যানার ফেস্টুনসহ নানা রকমের প্রতিষ্ঠানের জীবন্ত বিল বোর্ডে পরিণত হয়েছে জয়পুরহাটের বিভিন্ন সড়কের পাশে থাকা গাছগুলো। গাছের গায়ে নির্বিচারে পেরেক ও তারকাঁটা ঠুকে স্টিকার ও সাইনবোর্ড লাগানো হচ্ছে। বাঁধা হচ্ছে অ্যালুমিনিয়ামের তার ও প্লাস্টিকের রশি। জয়পুরহাট জেলার সদর, কালাই, ক্ষেতলাল, আক্কেলপুর ও পাঁচবিবি উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, প্রধান প্রধান সড়কের পাশের গাছে গাছে তারকাঁটা ও পেরেক দিয়ে ছোট ছোট সাইনবোর্ড ও স্টিকার লাগানো হয়েছে। এতে গাছগুলো ক্ষতবিক্ষত হওয়ার পাশাপাশি বেড়ে ওঠায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। ক্ষেত্র বিশেষে মারাও যাচ্ছে। শত শত পেরেক ও তারকাঁটায় বিদ্ধ হয়ে যে গাছগুলো বেঁচে থাকছে, সেগুলোও বয়স ফুরানোর পর কাঠ হিসেবে ব্যবহারের ক্ষেত্রেও অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে। তবে যারা গাছে গাছে নির্মমভাবে স্টিকার ও সাইনবোর্ড লাগাচ্ছেন তারা বেশ নির্বিকার! তাদের প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড যে পেরেক বা তারকাটা দিয়ে লাগানো হয়েছে, সেই খবরও বুঝি জানেন না। জানলেও এতে কী বা যায় আসে—এমন ভাব তাদের। গাছে তারকাঁটা দিয়ে লাগানো স্টিকার থেকে নম্বর নিয়ে কথা হয় গ্রাজুয়েট জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে। ওপার থেকে ফোন রিসিভ করেন নিতা নামে প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মকর্তা। তারকাঁটা দিয়ে স্টিকার লাগানোর খবর জানেন না, রশি দিয়ে লাগানোর কথা বলে দাবি করেন তিনি। মল্লিক ডিজিটাল ডায়ানষ্টিক সেন্টার” স্টিকারে থাকা ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানের যিনি ফোন রিসিভ করেন তার নাম রাবেয়া সুলতানা। তিনি গাছে তারকাঁটা দিয়ে স্টিকার লাগানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, এগুলো অনেক আগে লাগানো হয়েছিল,এটা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের ব্যাপার,আমি অবশ্যই এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানাবো। মাত্রাই- গোবিন্দগঞ্জ সড়কের বটতলার মোড়ে গাছে পেরেকঠোকা প্রভা ফিড এর নাম্বারে ফোন করে সাইনবোর্ড লাগানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন,আপনিই বলেন কোথায় লাগাব।তিনি হুমকি দিয়ে সরকার দলীয় বিরাট নেতার পাওয়ার দেখালেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শেখ বখতিয়ার উদ্দীব বলেন, পেরেক ঠুকলে গাছের জীবনীশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। কারণ গাছ শেকড়ের মাধ্যমে খাদ্য গ্রহণ করে। পেরেক ঠুকলে খাবার সংগ্রহে বাধা তৈরি হবে আর গাছের ওই অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তা দিয়ে ব্যাকটেরিয়া ও অণুজীব ঢোকে। এতে ধীরে ধীরে মরে যেতে পারে গাছ। জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃফারুক হোসেন এর সাথে মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,বিষয়টি বন বিভাগের আমি এসব বিষয়ে কোন কথা বলতে পারবোনা আপনারা বন- বিভাগের সাথে যোগাযোগ করেন। জয়পুরহাট জেলা বন সংরক্ষক কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম রায়হান কবির বলেন,গাছে পেরেক দিয়ে স্টিকার,ব্যানার,ফেস্টুন সাইনবোর্ড লাগানোর বিষয়ে প্রতিনিয়ত আমাদের জনসচেতনতা মূলক কর্মকান্ড চালু আছে।সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে আমরা এ বিষয়ে জানিয়েছি।জনসচেতনতা ও মূল্যবোধই পারে এসব পেরেক না লাগিয়ে গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে।