ঢাকা, শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮শে বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি তৎপর দল গোছাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : বুধবার ১৭ নভেম্বর ২০২১ ১২:২৮:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি

দল গোছাতে এবার আটঘাট বেঁধে নেমেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। রাজনীতির প্রাণ ঢাকাকে আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু ধরে সক্রিয় করা হচ্ছে বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে। দলের সাংগঠনিক সব জেলা কমিটি পুনর্গঠনেও চলছে তোড়জোড়।

আগামী দিনে আন্দোলন কর্মসূচির সব পরিকল্পনায় বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা। এরই মধ্যে দুই শাখায় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমানউল্লাহ আমানকে আহ্বায়ক ও আমিনুল হককে সদস্য সচিব করে ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার ৪৭ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অন্যদিকে আবদুস সালামকে আহ্বায়ক ও রফিকুল আলম মজনুকে সদস্য সচিব করে বিএনপি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার ৪৯ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ঢাকার ওয়ার্ড ও থানার যে কমিটি হবে, সেখানে মাঠপর্যায়ের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের রাখতে কড়া নির্দেশনা দিয়েছে হাইকমান্ড।

দলীয় সূত্র বলছে, ত্যাগী ও রাজপথে শক্তভাবে দাঁড়ানোর মতো নেতাদেরই ওয়ার্ড ও থানা কমিটিতে রাখা হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী রোডম্যাপটি প্রস্তুত করা হয়েছে।

রোডম্যাপ অনুযায়ী ঢাকা মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ড কমিটিতে নতুন নেতৃত্ব আনা হবে। সংগঠনকে গতিশীল ও আন্দোলন বেগবান করতে যোগ্য ও পরীক্ষিত নেতাদের নিয়ে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হবে। আন্দোলনে নেমে মামলার শিকার নেতাকর্মীদের সহায়তা দিতে তৎপর থাকবে ‘আইনি সহায়তা সেল’। আহত নেতাকর্মীদের চিকিৎসার জন্য সক্রিয় থাকবে ‘চিকিৎসা সহায়তা সেল’।

বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির আন্দোলন বারবার ব্যর্থ হওয়ার কারণ ছিল ঢাকা মহানগরের দুই শাখার সাংগঠনিক দুর্বলতা। সার্বিক বিষয় মাথায় রেখে এবার রাজপথে নামার আগে প্রথমে দল গোছাতে মনোযোগ দিচ্ছে দলের হাইকমান্ড।

আন্দোলন কর্মসূচির প্রস্তুতি কেমন—এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময় এখনো আসেনি। আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত হলে সময়মতো আপনারা দেখতে পারবেন।’

তিনি বলেন, ‘আন্দোলন সংগঠন চলমান প্রক্রিয়া। আমরা এখন ওয়ার্ড পর্যায়ে কর্মিসভা করছি। কর্মিসভা শেষ হলে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু করবো, যেন যোগ্য নেতৃত্ব স্থান পায়। মূলত এখন সংগঠনকে সুসংগঠিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’

 

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির দপ্তর সম্পাদক সাইদুর রহমান মিন্টু বলেন, ‘বিএনপি বড় দল। আন্দোলনের প্রস্তুতি এ দলের সবসময়ই থাকে। আমরা এখন সংগঠন গোছানোতে জোর দিয়েছি। রাজপথে যারা থাকেন, যাদের থাকার আগ্রহ আছে, তাদের দিয়েই সংগঠনের সর্বস্তর সাজানো হচ্ছে।’

জানতে চাইলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ঢাকা মহানগরের নেতাকর্মীরা ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে টানা তিন বছর কঠোর আন্দোলন করেছে। রাস্তায় নেমেছে, পুলিশের হামলা-মামলার শিকার হয়েছে। বাসায় বাসায় গিয়ে তাদের হয়রানি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে দুঃখের বিষয় ওই আন্দোলনে সফলতা আসেনি।’

তিনি বলেন, ‘কিছু দুর্বলতা তো ছিলই। সেখান থেকে আবারও উঠে দাঁড়াতে হবে। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য যে সময়টুকু দরকার, তা আমরা পেয়েছি। এখন আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রামে দল গোছাতে হবে। ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের সব কমিটি শক্তিশালী করতে হবে।’

সম্প্রতি ঢাকায় এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ঢাকা শহরকে গণতন্ত্রের দুর্গ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এ দুর্গ এমনভাবে গড়ে তোলা হবে যে, গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে ফ্যাসিস্ট দানবীয় সরকার পরাজিত হবে।‘