মাতৃভাষায় শিক্ষা শিশুদের অধিকারের আহ্বান।
“মাতৃভাষায় শিক্ষা, সব শিশুর অধিকার”
শ্লোগানকে সামনে রেখে মাতৃভাষায় ছড়া ও কবিতা আবৃত্তি উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে পালিত হলো " বিশ্ব মানবাধিকার দিবস"।
সারাবিশ্বে ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১০ ডিসেম্বর শুক্রবার স্কুল ছুটি থাকায় আজ ১১ ডিসেম্বর শনিবার এফসিডিও এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে। স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাবারাং কল্যাণ সমিতি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সেতু-এমএলই প্রকল্পের উদ্যোগে পানছড়ি ও মহালছড়ি উপজেলায় একযোগে যথাক্রমে গোলক প্রতিমামুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চৌংড়াছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মানবাধিকার দিবস পালিত হয়।
"মাতৃভাষায় শিক্ষা, সব শিশুর অধিকার" শ্লোগানকে সামনে রেখে গোলক প্রতিমামুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চৌংড়াছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাকমা ও মারমা শিশুরা নিজ মাতৃভাষায় ছড়া ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। দুইটি বিদ্যালয়ের অর্ধশত শিশু উৎসবমূখর পরিবেশে ছড়া ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতার শেষে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করেন। এছাড়া প্রত্যেক প্রতিযোগীকেও স্বান্তনা পুরস্কার হিসেবে খাতা, স্কেল ও কলম উপহার দেয়া হয়।
পুরস্কার বিতরণের শেষে মহালছড়ি উপজেলাধীন চৌংড়াছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুপ্তা বড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্য আনন্দময় এই অনুষ্ঠান এবং মাতৃভাষায় শিক্ষার চর্চাকে জোরদার করার জন্য এ ধরণের আয়োজনকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ে ৯০ শতাংশের বেশি মারমা ভাষাগোষ্ঠীর শিশু হলেও মারমা ভাষার মাত্র একজন শিক্ষক হওয়ায় প্রাক হতে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষায় পাঠদান সচল করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। বিদ্যালয়ে এমএলই কার্যক্রমকে সচল রাখতে হলে সংখ্যাধিক্য শিক্ষার্থীর ভাষার কথা বিবেচনায় প্রত্যেক বিদ্যালয়ে ওই ভাষার কমপক্ষে দুইজন করে শিক্ষক পদায়ন করতে কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানান। পানছড়ি উপজেলার গোলক প্রতিমামুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপন চাকমা এমএলই বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে বলেন, বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগে সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রশিক্ষণ এবং ক্লাশ রুটিনে এমএলই পাঠদান জরুরী।
উল্লেখ্য, জাবারাং কল্যাণ সমিতি, দাতা সংস্থা এফসিডিও এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে ২০১৯ সাল হতে সেতু-এমএলই প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার ৩৫টি বিদ্যালয়ে চাকমা, মারমা ও ককবরক ভাষায় পাঠদানের উপর শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়সমূহে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি হতে দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।