ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বেনাপোলে ৪৮৫ প্যাকেজের ফেব্রিক্সের একটি চালান আটক করেছে কাষ্টমস

মনির হোসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ১ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৪০:০০ অপরাহ্ন | খুলনা
বেনাপোল বন্দরের ১৭ নম্বর শেড থেকে কাগজপত্রবিহীন  ভারতীয় শাড়িসহ ৪৮৫ প্যাকেজ ফেব্রিক্সের একটি চালান আটক করেছে কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ। পণ্য চালানটি গতকাল সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত ৯ টার দিকে আটক করা হয়েছে।
 
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল কাষ্টমসের উপ কমিশনার অথেলো চৌধুরী বলেন, গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানা যায়, কোন এক অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে শাড়িসহ ৪৮৫ প্যাকেজ ফেব্রিক্সের একটি চালান ভারত থেকে এনে বেনাপোল বন্দরের ১৭ নম্বর শেডে রেখেছে। এ ধরনের তথ্যের ভিত্তিতে বেনাপোল কাষ্টমস কমিশরারসহ একটি টিম বন্দরের ১৭ নম্বর শেডে অভিযান চালিয়ে পণ্য চালানটি আটক করা হয়। যার ওজন ১৭ হাজার কেজি। পণ্য চালানটির শুল্ককরসহ মোট মুল্য প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ টাকা। তবে কে বা কারা এর সাথে জড়িত রয়েছে ও এর মালিক কে তার সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি।
 
বেনাপোল কাস্টমস হাউজের উপ কমিশনার অথেলো চৌধুরী জানান, আমদানিকৃত কোন পণ্যে অনিয়ম পেলে সেটা তো আটক করতেই হবে। সোমবার রাতে বেনাপোল বন্দরের ১৭ নম্বর শেড থেকে একটি কাগজপত্র বিহীন ৭০ পিচ শাড়িসহ ৪৮৫ প্যাকেজের ফেব্রিক্সের চালান আটক করা হয়েছে। বর্তমানে বেনাপোল কাস্টমস হাউসকে অনিয়মে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। কেউ অনিয়ম করলে কোন প্রকার কাউকে ছাড় দেয়া হয় না। তবে এ ধরনের অবৈধ কাজের সাথে কারা জড়িত তদন্ত না করে বলা সম্ভব হচ্ছে না। এ ধরনের কাজের সাথে যারা জড়িত আছে তাদের ছাড় দেয়া হবে না।
 
এদিকে সাধারন ব্যবসায়ীরা প্রশ্ন তুলেছে এতো বিপুল পরিমাণের একটি পণ্য চালান কি ভাবে কাগজপত্র বাদে বেনাপোল চেকপোস্ট কার্গো শাখার এন্ট্রি ছাড়াই বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করলো এবং বন্দরের ১৭ নম্বর শেডে রাখা হলো। বন্দরের শেড ইনচার্জ সরাসরি জড়িত বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তার সহযোগিতা ছাড়া ভারতীয় ট্রাক থেকে এ পণ্য চালান কাগজপত্রবিহীন তার সেটের মধ্যে রাখার অন্য কারো ক্ষমতা নেই।
 
বন্দরের ১৭ নং শেডের ইনচার্জ মতিন বলেন, এ পণ্য কার আমি জাানি না। কি ভাবে তার শেডে নামল তাও আমি বলতে পারবো না। শেডের চাবি তার কাছে থাকে, কি ভাবে এ অবৈধ পণ্য বন্দরের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রবেশ করল এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার এখানে প্রান্ত নামে একজন এনজিও কর্মী থাকে সে মিয়ান নামে একটি সিএন্ডএফ এজেন্সির আব্দুল্লাহ নামে একজন বর্ডারম্যানের সহযোগিতায় শেডে পণ্য লোড-আনলোড করে আমার অনুপস্থিতিতে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই নামে কোন সিএন্ডএফ এজেন্টের কোন অস্তিত্ব নেই বেনাপোলে এবং আব্দুল্লাহ নামে কোন বর্ডারম্যানও নেই।
 
উল্লেখ্য এ চালানটি ভারত থেকে গতকাল সোমবার সকাল ১০ টার সময় বন্দরের ১৭ নং শেড ইনচার্জ আব্দুল মতিন এর সহযোগিতায় আনলোড হয় ভারতীয় ট্রাক থেকে। এরপর বেলা ১২ টার দিকে ওই পণ্য কাগজপত্র বিহীন একটি কাভার্ডভ্যান ট্রাকে (খুলনা মেট্রো-ট ১১-২১৬৭) লোড করার সময় কাস্টমস আটক করেন।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, দীর্ঘদিন যাবত বেনাপোলের একটি চক্র সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে জাল কাগজপত্রের মাধ্যেমে স্থলবন্দর ও কাস্টমস এর কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে কাগজপত্রবিহীন ভারতীয় পণ্য নিয়ে এসে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। এদের কোন সিএন্ডএফ এজেন্ট লাইসেন্স না থাকলেও তারা বেনাপোলের কয়েকজনের লাইসেন্স ভাড়া নিয়ে এ কাজ করে থাকে। আর এসব শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অসাধু আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্ট ভাড়া নেওয়া সদস্যরা দিনে দিনে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছে। 



সবচেয়ে জনপ্রিয়