সিন্ডিকেট না বলে ব্যবসায়ী যারা আছে তারা যথেষ্ট শক্তিশালী বলে মন্তব্র করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলছেন, খুব বড় ব্যবসায়ী, মাঝারি বা যারা সরাসরি আমদানি করে, সাপ্লাই দেয়, আবার যারা এজেন্ট শুধু সাপ্লাইও দেয় না শুধু ডিও লেটার দেয়। এটা একটা জটিল জিনিস, যা ভাঙা কঠিন।
বুধবার ( ১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন তিনি।
আজকে চাল, ডাল, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল, সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এমন তথ্য জানিয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সয়াবিন হয়তো কিছুটা সহনীয় হতে পারে। রোজা পর্যন্ত যত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস আছে চাল; ডাল, খেজুর, ছোলা, সয়াবিন তেল, চিনি এগুলোর সরবরাহ নিশ্চিতের চেষ্টা করা হচ্ছে। বাজারটা যাতে আরও একটু সহনীয় হয়। তবে সময় লাগবে। কারণ এগুলো বেশিরভাগ আমদানি করতে হয়।
আমরা আজকে সয়াবিন আমদানি করতে বলেছি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা চাচ্ছি, যত সম্ভব আমাদের দিক থেকে সাপ্লাইটা আসুক। ব্যাবসায়ীদের কাছে যাতে একটা মেসেজ যায় দেশে সরবরাহ আছে। এখন এটা যাচ্ছে কিনা সেটা আলাদা ব্যাপার।
৯ ডিসেম্বর সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়। এরপর আরও ৯ দিন চলে গেলেও বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। এমন প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বাজারের ব্যাপারটার সঙ্গে আমাদের একটু গ্যাপ আছে। নির্ধারিত দামেই বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু বাজারে অনেক রকম ব্যাপার আছে। যেমন- যেদিন ৮ টাকা দাম বাড়ানো হয়, তার পরের দিন বাজারে অনেক সরবরাহ ছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা হচ্ছে- দাম বাড়ানো হয়েছে, আবার হয়তো বাড়বে।
ব্যবসায়ীরা সবাই মিলে তাদের স্বার্থে দাম ঠিক করে: ভোক্তাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে বাজারে কার্যকর মনিটরিং করা হচ্ছে না, যার সুযোগ নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, মনিটরিং হচ্ছে না, তা নয়। সবাই মিলে ঠিকঠাক করে, এমনটা বাইরের দেশে হয় না। কিন্তু এখানে সবাই মিলে তাদের স্বার্থে দাম ঠিক করে বিক্রি করে। বাজারে ভোক্তা অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর কত জায়গায় যাবে।
মানুষ যদি সচেতন না হয়, মানুষ যদি নিজেরা মনিটিং করে কমপ্লেন করে, তখন আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব বলে প্রতিশ্রুতি দেন সালেহউদ্দিন আহমেদ।তিনি বলেন, আমাদের এখানে হয় কি, সহনশক্তি বেশি, কিনে নিয়ে চলে যায়। কিন্তু বাইরের ক্রেতা খুব সচেতন থাকে, অভিযোগ করে। পার্শ্ববর্তী ভারতে দেখেন দাম বেড়ে গেলে ওরা প্রটেস্ট (প্রতিবাদ) করে। আমি এখানে প্রটেস্ট করতে বলছি না, এটলিস্ট (কমপক্ষে) সবাই যাতে বলে। মনিটরিং করে তাও আমরা অনেক সময় খবর পাই তা দেখি মানুষ সহ্য করে।
বাংলাদেশে খুচরা পর্যায়ে অভিযান চালানো হয়, যার প্রভাব বাজারে সেভাবে পড়ে না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সবাইকে এক সঙ্গে ধরলে বাজারে কৃত্রিম সংকট আরও বেশি হবে। আমরা চাই সবাই ব্যবসা করুক। তবে চাই না অতিরিক্ত লাভ করুক। আর যারা উৎপাদন করে তারা যেন না ঠকে যায়। উৎপাদনের খরচটা যেন তারা পায় আমরা সেই চেষ্টা করছি। একটু সময় লাগবে যোগ করেন তিনি।
বায়ান্ন/এমএমএল/পিএইচ