ঢাকা, রবিবার ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮শে পৌষ ১৪৩১

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে উপ-নির্বাচন : অর্ধশতাব্দি পর নৌকার বিজয়

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : | প্রকাশের সময় : রবিবার ৫ নভেম্বর ২০২৩ ১০:০২:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর
অর্ধশতাব্দি পর নৌকার বিজয়। সেই ১৯৭৩ সালের পর ২০২৩ সাল। টানা পঞ্চাশ বছর পর সরাইলে বিজয় পেলো আওয়ামী লীগ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. শাহজাহান আলম সাজু নৌকা প্রতীকে সাবেক দুই-দুইবারের সাংসদ অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করলেন। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হলেও ভোটারের উপস্থিতি ছিলো কম।
 
 
রোববার (০৫ নভেম্বর) সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা নাগাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল- আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলে। ভোটগ্রহণ শেষে শুরু হয় গণনা। নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্যমতে মোট ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. শাহজাহান আলম সাজু। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক দুইবারের সাংসদ অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা কলারছড়া প্রতীকে পান ৩৭ হাজার ৭৫৭ ভোট। ফলে ২৮ হাজার ৭৫৭ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. শাহজাহান আলম সাজু। রোববার রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম ফলাফল ঘোষণা করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. শাহজাহান আলম সাজুকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
 
 
সকাল আটটায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর অনেক কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারের দেখা পাওয়া যায়নি। সকাল সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত আশুগঞ্জ উপজেলার তারুয়া শালুকপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোট পড়ে ৮৭টি এবং একই সময়ে সোহাগপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও ভোট পড়ে অনেক কম। ভোট শুরুর পর ২ ঘন্টায়  সকাল ১০ টা পর্যন্ত শতকরা ৫ ভাগ ভোট পড়েছে বলে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম নিশ্চিত করেন। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন জানান, উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। নির্বাচনে ৮০০ পুলিশ ও এক হাজার ৫৮৪জন আনসার মোতায়েন করা হয়। এছাড়া বিজিবি ও র‍্যাব সদস্যরা মাঠে কাজ করে। 
 
 
একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদকালে দু'টি উপ-নির্বাচনসহ তিনটি নির্বাচন হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল- আশুগঞ্জ) আসনে।বিগত ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন বিএনপির উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা। পরে তিনি সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে এই আসনে উপ-নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্ধিতা করে আওয়ামী লীগের সমর্থনে আবারো জয়ী হন উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যুতে গত ৪ অক্টোবর আসনটি শূণ্য ঘোষণা করে আবারও উপ-নির্বাচনের তফসিল দেয় নির্বাচন কমিশন। উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ পাঁচজন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। তারা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. শাহজাহান আলম সাজু, জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আব্দুর রাজ্জাক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক দুই বারের এম.পি জিয়াউল হক মৃধা। তবে ভোটের শুরু থেকে লড়াই নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কলারছড়ি প্রতীকে হবে বলে আওয়াজ ওঠে। রোববার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা নাগাদ ভোটগ্রহণ চলে। ভোটারের উপস্থিতি কম থাকলেও কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।ভোটগ্রহণ শেষে শুরু হয় গণনা। নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্যমতে মোট ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. শাহজাহান আলম সাজু। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক দুইবারের সাংসদ অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা কলারছড়া প্রতীকে পান ৩৭ হাজার ৫৫৭ ভোট। ফলে ২৮ হাজার ৭৫৭ ভোট বেশি পেয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. শাহজাহান আলম সাজু বিজয়ী হন। 
 
 
উল্লেখ্য, এই আসনটিতে বিগত ১৯৭৩ সালের আওয়ামী লীগ থেকে তাহের উদ্দিন ঠাকুর সর্বশেষ জয়লাভ করেছিলেন। এরপর গত ৫০ বছরে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী এই আসনে জয়লাভ করতে পারেননি। এই আসন থেকে পাঁচবার এম.পি নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রয়াত উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়া। এই উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা মহাজোট থেকে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে দুইবার এম.পি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া চার দলীয় জোট থেকে ইসলামী ঐক্যজোট নেতা মুফতি ফজলুল হক আমিনী জয়লাভ করেছিলেন। এই উপ-নির্বাচনে ২২ বছর পর আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী দিয়েছে।