রেললাইনে বসে মোবাইল গেইম খেলাই কাল হলো টগবগে যুবক রিমঝিম'র। আচমকা আসা ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে জীবন গেলো তার। গুরুতর আহত হলো তার দুই বন্ধু আরাফাত ও দিপু মিয়া। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দু'জনকেই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) দিবাগত গভীররাত ১২ টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের আউটারের পুনিয়াউট এলাকার রেললাইনে ঘটে এই মর্মান্তিকতা। নিহত রিমঝিম মিয়া (২৩) জেলা শহরের সরকারপাড়া মহল্লার মৃত মনজু মিয়ার ছেলে। আহত আরাফাত (২২) সরকারপাড়া এলাকার সোনা মিয়ার ছেলে ও দিপু মিয়া (২৫) একই এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে। তারা তিনজনই রাজমিস্ত্রী সহকারী হিসেবে কাজ করতো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে পুনিয়াউট এলাকায় তিন তরুণ ঢাকাগামী রেল লাইনে বসে মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তারা ট্রেন আসার বিষয়টি খেয়ালই করতে পারেননি। এসময় সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সুরমা ট্রেনের নীচে তিনজনই ট্রেনে কাটা পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই রিমঝিম মারা যান। অন্য দু'জন পা ও মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে হতাহতদের উদ্ধার করে আড়াইশ' শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর আহত দুইজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
এদিকে, নিহত রিমঝিমের বাড়িতে চলছে মাতম। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা লিপি বেগম। তিনি জানান, রিমঝিম রিমঝিমের বাবা ১০ বছর আগে মারা গেছে। এরপর থেকেই বহু কষ্টে চলছিলো তাদের পরিবার। রিমঝিম বড় হয়ে রাজমিস্ত্রির সহকারি হিসেবে কাজ করে দুই ভাই, এক বোন, নানীসহ পাঁচজনের পরিবারটি চালিয়ে আসছিলো। প্রতিদেনর মতো শনিবারও দিনভর কাজ শেষ করে সন্ধ্যার পর সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। তাকে মোবাইলে গেইমস খেলতে বারংবার বারণ করেছি। সে আমাদের কথা শুনলো না। আমাদের অজান্তের সে ওইখানে গিয়ে বন্ধুদের নিয়ে মোবাইলে গেইমস খেলছিলো। অপরদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, প্রায় সময়ই রেললাইনে কাটা পড়ে অনেকের মৃত্যু হয়। তাই সকলকে সচেতন হতে হবে। সেই সাথে রেল লাইনের নিরাপত্তায় রেলওয়ে পুলিশের তৎপরতা আরো বাড়াতে হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ধরণের দুর্ঘটনা রোধে রেল সড়কের উপর অহেতুক আড্ডা, গেইম খেলা বন্ধে পুলিশি তৎপরতা আরো বাড়ানো হবে। সেই সাথে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করা হবে।'
