যৌনকর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবির স্বীকৃতি দিয়ে আইন পাশ করেছে বেলজিয়াম। দেশটির যৌনকর্মীরা এখন থেকে পাবেন পেনশন, মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সামাজিক সুরক্ষার বেশ কিছু সুযোগ। এমন বিধান বিশ্বে প্রথম ও ঐতিহাসিক বলে জানাচ্ছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বেলজিয়াম সরকার বলছে, এই আইনের ফলে অন্যান্য পেশার মতো যৌনকর্মীরাও সামাজিকভাবে সুরক্ষিত থাকবেন। কর্মক্ষেত্রে তারা আর বঞ্চনার শিকার হবেন না।
আইনে বলা হয়েছে, প্রত্যেকের কাজের অধিকার অক্ষুণ্ণ থাকা উচিত। কর্মক্ষেত্রে বঞ্চনা দূর করতে নতুন আইনে যৌনকর্মীদের দেওয়া হবে কর্মসংস্থানের প্রশংসাপত্র। সেটা দেখিয়ে তারা স্বাস্থ্যবিমা, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং আইনি সুরক্ষা পাবেন।
শুধু তাই নয়, নতুন আইনে যৌনকর্মীদের নিরাপত্তা জোরদার করতে ‘প্যানিক বাটন’-এর মতো সুবিধা আনা হচ্ছে। কারো ব্যবহার বা কাজে অস্বস্তি বোধ করলে নির্দিষ্ট বোতামে চাপ দিয়ে সাহায্য চাইতে পারবেন সংশ্লিষ্ট যৌনকর্মী। তাদের থাকছে চাইলেই ‘না’ বলার অধিকার।
বিশ্বে লাখ লাখ যৌনকর্মী রয়েছেন। বেশকিছু দেশে পতিতাবৃত্তি পেশার বৈধতা রয়েছে। তবে কর্মসংস্থানের অধিকার দেওয়ার নজির বেলজিয়ামেই প্রথম। বেলজিয়ামে এই আইন এক দিনে আসেনি। করোনাভাইরাসের সময়ে রুজিরুটি নিয়ে সংশয়ের মধ্যে পড়েছিলেন যৌনকর্মীরা। ওই সময়ে আন্দোলনও হয়।
এই আইন তৈরির আগে বিরোধিতাও ছিল। সমালোচকরা যুক্তি দেন, আইন এনে যৌনকর্মীদের সুরক্ষা দেওয়ার মানে হলো দেহব্যবসা এবং নারী পাচারের মতো সমস্যাগুলোকেও আইনি বৈধতা দেওয়া।
এ নিয়ে বেশকিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সরব হয়। তাদের দাবি, শ্রমের অধিকারের চেয়েও প্রচুর যৌনকর্মী চান এই পেশা থেকে মুক্তি। পাল্টা যুক্তিতে বলা হয়, যৌনকর্মীদের জন্য এই আইন আনলে এই পেশায় যারা ‘নিয়োগকর্তা’, তাদের জুলুম বন্ধ করা যাবে। কর্মীদের মর্যাদা বৃদ্ধি হবে। তাদের শ্রমের প্রতি সম্মান জানানো হবে।
বায়ান্ন/একে