ঢাকা, সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ঠা অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মেয়র হওয়ার আগেই মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী

এমএ রহিম, সিলেট: | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৩ ১১:৫৪:০০ পূর্বাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন



মেয়র হওয়ার আগেই মেয়রের আমেজ ভোগ করতে শুরু করেছেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। সিলেট সিটি করপরোশনের নৌকার কান্ডারী হয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করার প্রস্তুতি নেয়ার পর থেকেই ওই পরিবেশ পরিলক্ষিত হচ্ছে। সাত সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত তিনি ছুটে চলেন নগরীর আনাচে কানাচে। সাথে থাকেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের তৃণমূলের কর্মীবহর। সকালে ঘর থেকে বের হয়ে গণসংযোগে যাওয়ার সময় আনোয়ারুজ্জামানের গাড়ি বহরের সাথে যুক্ত হয় একাধিক গাড়ি। এই গাড়ির বহর ছুটে চলে অনেকটা বিজয় উৎসবের দিকে। যেখানে কর্মসূচি থাকে সেখানে গিয়ে যাত্রাবিরতি হয়। মূহূর্তের মধ্যে ওই এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে। কর্মসূচিতে সিলেট নগরবাসীক সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখান আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। স্বপ্ন দেখান স্মার্ট নগরীর, স্মার্ট নাগরিকের। আধ্যাত্মিক নগরীর সকল জঞ্জাল দূর করার প্রতিশ্রুতি দেন দৃঢ় কন্ঠে। যার জন্যে তিনি মাত্র দুই মাসের মধ্যে সিলেটবাসীর মনে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পেরেছেন। প্রতিপক্ষরাও আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে নিয়ে আলোচনায় মেতে উঠেন। বিশেষ করে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর স্মার্ট নগরীর ঘোষণা তুমুলভাবে আলোচিত হচ্ছে।

স্মার্ট নগরী আর স্মার্ট নাগরিক বিষয় নিয়ে মুখোমুখি হতেই যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বিস্তারিত তুলে ধরেন দৈনিক বায়ান্নের কাছে। ৩ এপ্রিল রাত ১০ টার দিকে সিলেট নগরীর মেজরটিলাস্থ মোহাম্মদপুর গ্রামে যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমের বাসভবনে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মুখোমুখি হয়েছিলেন দৈনিক বায়ান্নের। এসময় তিনি ওই এলাকায় গণসংযোগ করছিলেন। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নিবেদিত প্রাণ নেতাকর্মীরাও ছিলেন ওই গণসংযোগ কর্মসূচিতে।  

আধ্যাত্মিক নগরী সিলেট সম্পর্কে বলতে গিয়ে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী জানাচ্ছিলেন, এই সিলেটের সন্তান তিনি। শৈশবে যে সিলেট দেখেছেন-তা আর নেই। প্রাকৃতিকভাবে মহান সৃষ্টিকর্তা এই সিলেট নগরীকে সাজিয়ে রেখেছিলেন। সৃষ্টিকর্তার সাজানো বাগান তছনছ হয়ে গেছে মানুষ রূপি দানবদের কারণে। সাজানো বাগানকে ধুলোর সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। আফসোস হয়। তছনছ হয়ে যাওয়া এই নগরীর মেয়র হওয়ার জন্যে কেন্দ্রের সবুজ সংকেত পেয়ে মাঠে নেমেছেন তিনি। মেয়র নির্বাচিত হলে অবশ্যই নগরবাসীর সহযোগিতা নিয়ে সিলেটকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার দৃঢ় অঙ্গিকারের কথা জানান। সিলেটকে সাজিয়ে তুলতে বিশেষজ্ঞদের মতামতকে কাজে লাগানো হবে বলেও জানালেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

স্মার্ট নগরী ও স্মাার্ট নাগরিক সম্পর্কে বলতে গিয়ে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ওই দুইটি শব্দের পরিধি অনেক বড়। স্মার্ট নগরী ও স্মার্ট নাগরিক তৈরি করতে হলে প্রথমে যে কাজটি করতে হবে তা হলো দুর্নীতিমুক্ত নাগরিক ও দুর্নীতিমুক্ত নগরী গড়ে তোলা। ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছি নগরবাসী আমাকে মেয়র নির্বাচিত করলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে। নগরবাসীকে সাথে নিয়ে অবশ্য সিলেট থেকে দুর্নীতিবাজ আর চাঁদাবাজসহ সকল ধরণের অপকর্মের মূল উ উৎপাটন করা হবে। অপকর্মকারীদের বিতাড়িত করা হবে। কারণ এরাই দেশকে এগিয়ে নেয়ার পেছনে বড় অন্তরায়। এই বিষয়ে কোনো ধরণের আপস করা হবে না। আর এই পরিকল্পনার মাধ্যমে শুরু হবে স্মার্ট নগরী ও স্মার্ট নাগরিক গড়ে তোলার কাজ। কারণ দুর্নীতিবাজ কখনই স্মার্ট নাগরিক হতে পারে না বা স্মার্ট নাগরিক দাবি করতে পারে না।
কিশোর বয়সে ৭ম শ্রেণিতে অধ্যায়নকালে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যোগ দেয়া আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কিশোর বয়স থেকে লালন করে যাচ্ছি। তিনি এদেশটাকে ভালোবাসতেন বলে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন মুক্তকামী বাংলার মানুষকে।

তিনি এই দেশকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু হায়েনারা তা হতে দেয়নি। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা হাল ধরেছেন দেশের। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন নিরলসভাবে। শেখ হাসিনার কর্মী আমি। কর্মী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিলেটবাসীকে শেখ হাসিনার উন্নয়ন উপহার দিতে চান। ইতোমধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা সিলেট নগরবাসীর উন্নয়নের এক হাজার তিনশত পঞ্চাশ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু ওই টাকা কোথায় ব্যয় হয়েছে তার হিসেব নেয়ার জন্যে তিনি নগরবাসীর উপর ছেড়ে দেন। অথচ রাজশাহী সিটি করপোরেশনের জন্যে একই সময়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল ৬০০ কোটি টাকা। কিন্তু আমরা কি দেখতে পাচ্ছি। রাজশাহীকে নান্দনিক শহরে পরিণত করা হয়েছে। আর সিলেট নগরীতে একটু বৃষ্টি হলে নগরবাসীর দুর্ভোগের সীমা থাকে না। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী দৃঢ়তার সাথে বলেন, সিলেটের মানুষকে আর ফাকি দেয়া যাবে না। অবশ্য তাঁরা তাঁদের পাওনা এবারের নির্বাচনের মাঠ থেকে আদায় করে নেবেন ফাকিবাজদের কাছ থেকে।