ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

যমুনায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধি ॥ শঙ্কায় বোরো চাষীরা

হাসান সিকদার, টাঙ্গাইল | প্রকাশের সময় : বুধবার ৬ এপ্রিল ২০২২ ০৪:০০:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের কয়েকদিন ধরে যমুনা নদীর পানি হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে। আর সে কারণেই পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আগেই আংশিক কাঁচা বোরো ধান কাটতে শুরু করেছে উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলের বোরো ধান চাষীরা। শুকনো মৌসুমে যমুনা চরাঞ্চলে ছোট-বড়-মাঝারি অসংখ্য ডোবা রয়েছে। আর সেই ডোবার চারপাশে এ বোরো ধান চাষ করেন যমুনা চরাঞ্চলের কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চরাঞ্চলের উপরিভাগে সৃষ্ট ডোবা গুলোতে চলতি বছরে ৯০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে এবং বাকি ৫০ হেক্টর জমির ধান কাটতে শুরু করেছে কৃষক।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার অর্জুনা, গাবসারা, গোবিন্দাসী ও নিকরাইল ইউনিয়নের যমুনা চরাঞ্চল এলাকার ছোট বড় অসংখ্য ডোবার চারপাশে বোরো ধান চাষ করেছে এখান কার কৃষকরা। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই সেই ধান কেটে ঘরে তুলবেন কৃষকরা। তবে কিছু জমির ধান কাটলেও অধিকাংশ পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় আংশিক কাঁচা অবস্থায় কাটতে শুরু করেছে বোরো চাষীরা।   

উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের খানুরবাড়ি গ্রামের বোরো চাষী আলতাফ মিয়া বলেন, আমি প্রায় এক বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছি। আর এক সপ্তাহের মধ্যে ধান পুরোপুরি পেকে যেত। নদীর পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে ধানগুলো এখনি কাটতে হচ্ছে। তবে আর এক সপ্তাহ পরে কাটতে পারলে ভালো ধান পাওয়া যেত।

অর্জুনা ইউনিয়নের কৃষক আজগর আলী বলেন, এ বছর বোরো ধানের আবাদ ভালো হয়েছিল। ইতিমধ্যে কিছু জমির ধান কেটে ফেলেছি। অবশিষ্ট জমির ধান ১০-১২ দিন পরে কাটতে চেয়েছিলাম। হঠাৎ যমুনার পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে এখনি ধানগুলো কাটতে হচ্ছে। যেখানে ২০ মণ ধানে পেতাম। সেখানে এখন ১৪ থেকে ১৬ মণ ধান পাবো। 

গাবসারা ইউনিয়নের বোরো চাষি ফজলুল হক, জাহাঙ্গীর ও মতি মিয়া বলেন, বিগত বছর গুলোর মতো এ বছরও আমরা বোরো ধান লাগিয়েছি। সারা বছর বোরো ধান দিয়েই সংসার চলে আমাদের। যমুনার তীরবর্তী ডোবাতে লাগানো বোরো ধান কাটতে শুরু করেছি। আর এক সপ্তাহ পরে কাটতে পারলে আরো বেশি ফলন পেতাম। 

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. হুমায়ুন কবির জানান, চলতি বছরে উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলে ৬৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে চরাঞ্চলের উপরিভাগে ৯০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সেগুলো কাটতে শুরু করেছে কৃষক। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। প্রায় ৪০ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। বাকি ৫০ হেক্টর জমির ধান কয়েক দিন পরে কাটার কথা থাকলেও পানি বৃদ্ধির কারণে সেগুলোও কাটতে শুরু করেছে বোরো চাষীরা।