রৌমারী উপজেলার বড়াইকান্দি বাজারের ইউনিয়ন ভুমি অফিস সংলগ্ন বোয়ালমারী যুব সমবায় সমিতি লি: সরকারি লিজকৃত জমিতে ২টি দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার দিনগত রাতের অন্ধকারে চেয়ারম্যানের পাহারাদার গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় ছাত্রলীগ সভাপতির নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় লোকজন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভু‚মি) কর্মকর্তা জিন্নাতুল ইসলামকে অভিযোগ করলে, তিনি ঘরের চাল, বেড়া ভেঙ্গে জব্দ করে রাখার নির্দেশ দেন ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তাকে।
প্রত্যেক্ষদর্শি ও অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বড়াইকান্দি বাজারে ইউনিয়ন ভুমি অফিসের সামনে বোয়ালমারী যুব সমবায় সমিতি লি: গত ২০১২ সালে সরকারের কাছে লিজ নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত ঘর নির্মাণ করে সমিতির অফিস কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। অফিস কার্যালয়টি ঝড়ে ভেঙ্গে পড়ে গেলে মেরামত করতে বিলম্ব হয়। ওই জায়গায় ঘরের খুটি থাকলেও এর উপর দিয়ে শৌলমারী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ সুজনের নেতৃত্বে সঙ্গোপাঙ্গো নিয়ে ও ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে পাহারায় থাকা ৯ জন গ্রাম পুলিশের সহযোগীতায় আমজাদ হোসেন ও ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের নামে রাতারাতি ২টি দোকান ঘর নির্মাণ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল হুদা আকন্দ, সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিনু মাষ্টার, আওয়ামীলীগ নেতা মোজাফ্ফর হোসেনসহ অনেকেই জানায়, বোয়ালমারী যুব সমবায় সমিতি লি: এর অফিস কার্যালয় ছিল। তারা নাকি সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়েছে। ঘরটি ঝড়তুফানে পড়ে যায়। পরে তারা অর্থের অভাবে ঘর মেরামত করতে না পারায়, এমন অবস্থায় থাকে। সেই জায়গায় অর্র্থের বিনিময়ে গত শনিবার রাতের অন্ধকারে গ্রাম পুলিশ ও ছাত্রলীগ সভাপতির নেতৃত্বে আমজাদ হোসেন ও চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের নামে ঘর দুটি নির্মাণ করেন।
বোয়ালমারী যুব সমবায় সমিতি লি: এর সভাপতি আব্দুল হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক বলেন, আমাদের সমিতির নামে সরকারের নিকট থেকে জায়গাটা লিজ নেয়া আছে। সেখানে ঘর নির্মান করে দীর্ঘদিন অফিস কার্যালয় হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছিল। ঝড়তুফানে ঘরটি নষ্ট হয়ে গেলে এমন অবস্থায় রয়ে যায়। হঠাৎ শনিবার রাতের অন্ধকারে বর্তমান চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে ও ছাত্রলীগ সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ সুজন তার লোকজন নিয়ে আমজাদ ও চেয়ারম্যানের নামে দুটি ঘর নির্মাণ করেছিল। উপজেলা সহকারি কমিশনার ভুমিকে অভিযোগ দিয়ে ঘরটি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।
অবৈধ দখলদার আমজাদ হোসেন জানান, এখানকার সকল সম্পত্তি আমার বাব দাদার পৈত্রিক সম্পত্তি। আমার এক সময় এখানে দোকান ঘর করে চা বিক্রি করতাম। বর্তমানে আমি অসহায় হওয়ায় একটি চায়ের দোকান ঘর দেয়ার জন্য ঘরটি নির্মান করতে ছিলাম।
ছাত্রলীগ সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ সুজন বলেন, অর্থ নিয়ে অবৈধ ভাবে দোকান ঘর নির্মাণের বিষয়টি আমি জানিনা। তবে যারা বলেছে মিথ্যা বলেছে। আমজাদের বাড়ি,আমার বাড়ির পাশাপাশি বলে আমি দেখতে আসছিলাম।
উপজেলা আ’লীগের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, কে বা কাহারা ঘর উঠাইছে তা আমি জানিনা।
শৌলমারী ইউনিয়ন (ভুমি) কর্মকর্তা রুহুল্যাহ খমেনী বলেন, আমি অফিসে এসে ঘরটি দেখতে পেয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমিকে অবগত করলে তিনি আমাকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে ঘরটি ভেঙ্গে জব্দ করে রাখি।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) জিন্নাতুল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে ঘর উত্তোলনের বিষয়টি আমাকে জানালে আমি ঘরটি ভেঙ্গে নির্মাণাধীন সামগ্রী জব্দ করে রাখার নির্দেশ দেই।
