স্বাধীনতার জন্য যেসব বীর সন্তান বুকের তাজা রক্ত দিয়েছেন তাদের ঋণ অবিস্মরণীয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী দিরাই হাতিয়া গ্রামের সুনামগঞ্জ মহকুমা ছাত্রলীগ নেতা তালেব উদ্দিন ও পাগলা ব্রাহ্মণগাঁও’র কৃপেন্দ্র দাস সহ অজানা আরো এক মুক্তিযোদ্ধা পাকবাহীনিদের হাতে বন্দি হন। ১৯৭১সালের ৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী সুনামগঞ্জ ছেড়ে যাওয়ার সময় আহসানমারা ফেরী ঘাটে তাদেরকে গুলি করে হত্যা করে এবং নদীতে ফেলে দিয়ে যায়। এ তিন শহীদের লাশ নদীর স্রোতে বেসে উজানীগাঁও গ্রামের জয়কলস উজানীগাঁও রশিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সুরমা নদীর তীরে এসে ভেসে উঠে। পরে স্থানীয় লোকজন শহীদের রক্তাক্ত লাশগুলো দেখতে পেয়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলার উজানীগাঁও রাশিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে এনে একটি কবরস্থানে সমাহিত করেন। এক কবরস্থানে শায়িত তিন মুক্তিযোদ্ধার দুই জনের পরিচয় সাথে সাথে নিশ্চিত হওয়া গেলেও তৃতীয় শহিদের নাম জানা যায়নি। তবে ওই তৃতীয় শহিদ উপজাতীয় এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ভুক্ত বলে একমত হয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। উজানীগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের ওই কবরস্থানটিতে একটি স্মৃতিসৌধও নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ এরকম একটি কবরস্থান অনন্য। ১৯৯৬ সন হইতে প্রতি বছরের ২৫ মার্চ ও ১৪ ডিসেম্বরে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন পুষ্পপস্তবক অর্পন করে আসছেন।
প্রতি বছরের ন্যায় সোমবার সকাল ১০ টায় শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উজানীগাঁও রশিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন শহীদদের কবরস্থানে পুষ্পপস্তবক অর্পন করা হয়। পুষ্পস্তবক অর্পন কালে উপস্থিত ছিলেন শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুকান্ত সাহা, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কাজী মুক্তাদির হোসেন, স্থানীয় সরকার(এলজিইডি) প্রকৌশলী আল নুর তারেক, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম খাঁন, উপজেলা সমবায় অফিসার মাসুদ আহমদ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার সোহাইল আহমদ, প্রাণি সম্পাদক অফিসার জোবায়ের আহমদ, উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. আতাউর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা অবনী বিশ্বাস, মসদ আলী, জয়কলস ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত সুজন, শান্তিগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ সহ প্রমুখ। অপরদিকে সকাল সাড়ে ১০ টায় শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস উপলক্ষে শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলার হল রুমে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।