নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ ঠিকঠাক আছে। আগামী নভেম্বরেই তফসিল ঘোষণা হবে।
রোববার (১৫ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মো. আলমগীর বলেন, মিনিমাম ৪৫ দিন সময় ধরে নভেম্বরে তফসিল ঘোষণা করা হবে। ঠিক কোন সপ্তাহে তা এখনো আলোচনা হয়নি।
ভোটের পরিবেশ আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আমাদের তো দেখি সব ঠিকঠাক আছে। সংবিধানে ইসিকে দায়িত্ব দেওয়া আছে চলমান সংসদের মেয়াদপূর্তির পূর্বের নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। সে অনুযায়ী ক্ষণ গণনা করে আমরা যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করছি। এখন শুধু তফসিল ঘোষণা বাকি আছে। সবাই নির্বাচন চাচ্ছে। ৪৪টা দলের সবাই নির্বাচনের পক্ষে।
বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে মো. আলমগীর বলেন, সেটা তো রাজনৈতিক বিষয়। তারা কীভাবে সমাধান করবেন, সেটা তাদের বিষয়। আমাদের সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
মো. আলমগীর বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষক আসার জন্য যে প্রচেষ্টা, তা আমরা শুরু করে দিয়েছি। এটা এখন বিভিন্ন দেশ থেকে যারা আসবেন, এতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে প্রয়োজনীয় যে যোগাযোগ ব্যবস্থা করার দরকার সেগুলো আমরা করব। এটা ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। যে কোনো দেশ থেকে যেন আসতে পারে। আমরা সার্কভুক্ত দেশ, ফেমবোসার ৩০ থেকে ৩৫ জনকে দাওয়াত দেব। তাদের সকল ব্যয় আমরা বহন করব। আর অন্য বিদেশি পর্যবেক্ষক যারা আসবে তাদের শুধু আমরা অনুমোদন দেব।
ব্যালট পেপার ভোটের আগের দিন বা ভোটের দিন সকালে দেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই ইসি সচিব বলেন, এটা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে যেখানে সকালে দেওয়া সম্ভব সেখানে সকালে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যেগুলোতে সকালে পাঠানো সম্ভব হবে না সেখানে আগের দিন পাঠানে হবে। সিদ্ধান্ত হবে তফসিলের সময়।
তফসিলের পর যেন কাউকে গ্রেপ্তার না করা হয়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে মো. আলমগীর বলেন, রাজনৈতিক মামলার বিষয়ে সিইসি সেদিন যা বলেছেন, এটা আসলে প্রসঙ্গক্রমে বলেছেন। আমাদের বিষয়টা হচ্ছে তফসিল ঘোষণা পরে যেন কোনো রাজনৈতিক হয়রানি করা না হয়। কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থেকে থাকে, কারো বিরুদ্ধে যদি গ্রেপ্তারযোগ্য অভিযোগ থেকে থাকে আদালতের নির্দেশে গ্রেপ্তার করতে পারবে। কিন্তু উনি যেটা মিন করেছেন, রাজনৈতিক কারণে কাউকে যেন গ্রেপ্তার না করে তফসিলের পরে, গ্রেপ্তার যদি করতেই হয় সেটা যেন তফসিলের আগেই করা হয়। তফসিলের আগে যদি কোনো মামলা না থাকে এবং ক্রিমিনাল অফেন্স করেনি তখন কাউকে গ্রেপ্তার করা হলে কমিশন তখন সেটা বিচার বিশ্লেষণ করবে। সেই হিসেবে কমিশনের কোনো বক্তব্য বা সাজেশন থাকলে সরকারকে দেবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, পুরনো মামলা, যদি ক্রিমিনাল মামলা থাকে, চুরি, ডাকাতি, খুন, খারাপি, মারামারি এগুলো আগে থেকেই থাকে.... এখন আমরা তফসিল ঘোষণা করলাম তারপর মামলা দিলেন ওই রকম বিষয় যেন না হয়, সে বিষয়ে সিইসি অনুরোধ করেছেন।
এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, আমরা পুলিশের দায়িত্ব পালন করি না। বলতে পারব না মাঠে কী হয়েছে। আমরা যেটা দেখব সেটা হলো, ওই সময় যেন রাজনৈতিক কোনো মামলা না হয়। কারো বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল অফেন্স থাকলে তিনি যেটা মিন করেছেন, সেটা তফসিলের আগে কেন গ্রেপ্তার করলেন না। অবশ্যই যদি দেখি আগে গ্রেপ্তার করা হয়নি, এখন তফসিল ঘোষণার পর করা হচ্ছে, সেটা আমরা বলব ফলাফলের পর করতে।
ডিসি, এসপিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু, সুন্দর, শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে যেন ডিসি, এসপিরা নিরপেক্ষভাবে কাজ করেন, সেটা বলা হয়েছে। আমাদের নির্দেশনা অমান্য করেছে এমন তো পাইনি এতদিন যত নির্বাচন করেছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তাদের ছাড় দেইনি।
দলীয় সরকারের অধীনে ভোট, নিয়ন্ত্রণ তাহলে আপনাদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ, রিটার্নিং অফিসাররা (ডিসি) তো আমাদের নিয়ন্ত্রণেই থাকবে।
বিএনপি না এলে কি খারাপ লাগবে, এমন প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা চাই সবাই নির্বাচনে আসবে। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করে আসছি। আগামীতেও সুষ্ঠু নির্বাচন করব।