কুল চাষ করে ভাগ্য বদলেছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের কালমেঘা পাথারপাড়া গ্রামের তিন তরুণ উদ্যোক্তা। তিন বন্ধু জুয়েল, সবুজ ও রোমান ৩ একর জমি লিজ নিয়ে চাষ করেছেন উন্নত জাতের কুল। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিন বন্ধু মিলে ৩ একর জমি লিজ নিয়ে বলসুন্দরী, কাশ্মিরী, সিডলেস ছাড়াও আগাম টককুলসহ চার জাতের কুল চাষ করেছেন। গাছে গাছে কুল গুলো ঝুলছে, আবার কেউ কুল গুলো ছিঁড়ে ঝুড়িতে রাখছেন। গাছে কুল ধরেছে খুবই। তিন বন্ধু ইতোমধ্যেই এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। তাদের দেখে অনেকেই কুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
কুল চাষি জুয়েল রানা বলেন, বেকার ছিলাম। তিন বন্ধু মিলে কুল চাষের পরিকল্পনা করি। ৩ একর জমি লিজ নিয়ে গত ২০২০ সালের শেষের দিকে এক হাজার ৪০০ কুলের চারা রোপণ করি। এ বছরই গাছে কুল ধরছে। প্রতিটি গাছে ১৫-৩০ কেজি কুল তোলতে পেরেছি। এ পর্যন্ত ৬০ ভাগ কুল তোলা হয়েছে। আরও ৪০ ভাগ কুল তোলতে পারবো। দুই বছরে কুল বাগানে খরচ হয়েছে ৫-৬ লাখ টাকা। এপর্যন্ত ৫ লাখ টাকার উপরে কুল বিক্রি করা হয়েছে। আশা করছি খরচ বাদে ২-৩ লাখ টাকা লাভ থাকবে। কুল চাষি রোমান বলেন, যশোর থেকে ১০০ টাকা করে ৫০০ বলসুন্দরী গাছের চারা, ৪০০ কাশ্মিরী গাছের চারা, ৪০০ আগাম টককুল গাছের চারা জমিতে রোপন করা হয়। এছাড়াও ৩৫০ টাকা করে ১০০ সিডলেস গাছের চারা রোপন করা হয়। প্রতিটি গাছে ভালো কুল এসেছে। এক বছরে ৭২ হাজার টাকা দিতে হয় তিন একর জমি লিজের জন্য। প্রতি কেজি কুল ৪০-৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ২ জন কর্মচারী সারা বছরের জন্য রেখে কাজ করা হচ্ছে। কুল চাষ করতে গিয়ে ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি খরচ বাদে আমাদের ২-৩ লাখ টাকা লাভ হবে।
সখীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মন জানান, সখীপুর উপজেলায় অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি উপজেলা ফল চাষের জন্য। এবছর ১২০ হেক্টর জমিতে চাষিরা কুল চাষ করেছেন। বলসুন্দরী, কাশ্মিরী, সিডলেস ছাড়াও আগাম টককুলসহ চার জাতের কুল চাষ করেছেন। চাষিরা অন্য ফসলের পাশাপাশি কুল চাষ করে ভালো লাভবান হচ্ছেন। আমরা কৃষি অফিস থেকে কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ নিয়মিত দিয়ে যাচ্ছি। চাষিদের সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি।