ঢাকা, সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ই পৌষ ১৪৩১

সহমত পোষণ না করায় শিক্ষকদের কথা বলার সুযোগ দেননি শাবি শিক্ষার্থীরা

রাহাত হাসান মিশকাত, শাবি : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ১৮ জানুয়ারী ২০২২ ০৭:২০:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে গিয়েছিলেন শাবি শিক্ষক সমিতি ও কয়েকজন শিক্ষক। কিন্তু আন্দোলনকারীদের দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা না করায় শিক্ষকদের কোনো কথা বলতে দেয়া হয়নি।

 

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৫ টার দিকে  শিক্ষক সমিতি এবং কিছু শিক্ষক কথা বলতে যান শিক্ষার্থীদের সাথে। শিক্ষার্থীদের সাথে একমত পোষণ এবং  এক দফা দাবির সাথে সহমত পোষণ না করায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের কথা বলার সুযোগ দেননি। ওই অবস্থায় শিক্ষকরা ফিরে যান। এর আগে দুপুরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল শাবি ক্যাম্পাসে গিয়ে আলোচনা করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে। সরকার শিক্ষার্থীদের পাশে আছে বলে জানান নাদেল। ছাত্রদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করার অনুরোধ করেন। সকল দাবি পূরণ করা হবে বলে জানান নাদেল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ভিসির অপসারণের দাবিতে অনড় থাকেন।

 

এর আগে প্রতিবাদী গানে গানে সোমবার রাতভর বিক্ষোভ করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের ওই  আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন  শিক্ষার্থীরা।

 

ভিসির পদত্যাগ দাবিতে নানা শ্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। গানে গানেও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তারা। এদিকে, উপাচার্যের ফটকের সামনে অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। তবে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে থাকলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শান্তিপূর্ণভাবেই বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা।

 

সোমবার সকাল থেকে ভিসিসহ প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আরও বেগবান হয়। দলে দলে এসে আন্দোলনে একাত্মতা জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

 

তাদের ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এখানে পুলিশ থাকবে কেন। তাদের এই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যেতে হবে।

 

সোমবার সকালে মুক্তমঞ্চের সমাবেশ থেকে উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। নানা স্লোগানে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছেন তারা।

 

বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিনের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে আন্দোলনে নামেন ওই হলের ছাত্রীরা। রোববার আন্দোলনের চতুর্থ দিনে এসে তা সহিংসতায় রূপ নেয়।

 

রোববার বিকেলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে ধাওয়া দিয়ে অবরুদ্ধ করে। এর জেরে সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ হামলা চালায়। এতে রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ক্যাম্পাস।

 

রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেন ভিসি। সেই সঙ্গে সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

 

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে গণিত বিভাগের অধ্যাপক ডা. রাশেদ তালুকদারকে।

 

অপরদিকে মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে আসামি করে সোমবার রাতে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন জালালাবাদ থানার একজন এসআই।