সাংবাদিক ফেরদৌসসহ তার পরিবারে হামলার ঘটনায় মূলনায়ক চৌকিদার নাজির হোসেন
উখিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বসতবাড়িতে ডুকে সাংবাদিক এম ফেরদৌস ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার চেষ্টার ঘটনায় আটকৃত আসামী নুরুল আবছারের স্বীকারোক্তিমূলে গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) নাজির হোসেন মূলহোতা বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় ফেরদৌস বাদী হয়ে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ২৯৬/২৩।
জানা যায়, চৌকিদার নাজির হোসেন ও তার ছেলে তারেক ও মোবারক আটককৃত নুরুল আবছারকে পঞ্চাশ হাজার টাকায় কন্ট্রাক্ট করে তাকে ফেরদৌসের গর্দান এনে দিলে নগদে পয়তাল্লিশ হাজার এবং পরবর্তীতে পাঁচ হাজার টাকার শর্ত জুড়ে দেয়।
এমন লোভনীয় অফারের কথা শুনে ঘাতক নুরুল আবছার লোভ সামলাতে না পেরে কথা অনুযায়ী কাজ করতে ফেরদৌসের বসতবাড়ি ঢুকে আচমকা ফেরদৌসকে দায়ের কুপ দিতে চাইলে তার সাথে ধস্তাধস্তি হয়। এমতাবস্থায় ফেরদৌসের গর্দানে হালকা দায়ের কুপ লেগে যায়। ফেরদৌসের পাশে থাকা তার স্ত্রী সন্ত্রাসী ধাক্কা দিলে সে বিদ্যুৎ গতিতে বের হয়ে ফেরদৌসের বৃদ্ধা মায়ের রুমে ঢুকে শুয়া অবস্থায় এলোপাতাড়ি কুপ বসিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে এ ঘটনায় উখিয়া থানা পুলিশকে জানালে একটি টিম এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ঘাতক আবছারকে আটক করে নিয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চৌকিদার নাজির হোসেনের পিতা উলা মিয়ার মৃত্যুর পর তার বোন বলকিস খাতুন থেকে সাংবাদিক ফেরদৌসের বাবা শামসুল আলম উখিয়া ভুমি রেজিঃ ৭১৫ নং কবলার দলিল মূলে ২৩ কড়া জায়গা ক্রয় করেছিলেন। সেই সময় হতে সাংবাদিক ফেরদৌস ও তার পরিবারের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল নাজির হোসেন ও তার ছেলেরা।
এ হুমকিতে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গেলো বছর সাংবাদিক ফেরদৌস বাদী হয়ে উখিয়া থানায় জিডি করেন। যার জিডি নং (৪৯৮/২২) তারিখ(১১/০৫/২২ইং)।
ঘাতক নুরুল আবসারের মা জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, আমার ছেলে আবছারকে আমি মানুষের মত মানুষ হওয়ার তাগিদে মাদ্রাসায় পড়ালেখা করিয়েছি। শিক্ষিত ছেলে হয়ে অন্য মানুষের প্ররোচনায় পড়ে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটাবে আমরা কল্পনাও করিনি। আমার মনে হচ্ছে তার মাথায় কোনভাবে সমস্যা হচ্ছে।
ঘাতক আবসারের বোন মুন্নি আকতার জানায়, আমার ভাইকে আমরা অনেক বুঝাইছিলাম মানুষের কোন কথা না শুনতে, এখন আপনারা আমার মা বাবাকে বাঁচান, আবছারকে ফাঁসি দিলেও আমাদের আপত্তি নেই। কারণ ফেরদৌসের পরিবারের সাথে আমাদের পরিবারে একটা সম্পর্ক আছে। আমাদের মধ্যে কোনদিন ঝগড়া বা বিবাদ হয়নি। মানুষের কথায় লোভে পড়ে সে তাদের সাথে বেঈমানী করেছে তাকে শাস্তি পেতেই হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য অলি আহমেদ মেম্বার জানান, ঘাতক আবছারের পরিবারের সাথে ফেরদৌসের পরিবারে কোন ঝামেলা বা মনোমালিন্য নেই। তারা একে অপরের প্রতিবেশী। তবে চৌকিদার নাজির হোসেনের সাথে তাদের একটা জায়গা জমির বিষয় নিয়ে ঝামেলা ছিলো সেটি আমরা অবগত ছিলাম। এ ছাড়া ফেরদৌসের পরিবারের সাথে এলাকার কোন ব্যাক্তির দ্বন্দ নেই।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, এমন লোমহর্ষক ঘটনায় আমরা প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছি। বাকী আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে এবং তদন্তপুর্বক সকল আসামীকে আইনের আওতায় আনা হবে। অপরাধী কেউ-ই ছাড় পাবেনা।