বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সিলেট বিভাগের ৪৪ ইউপির নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে সংঘাতের কারণে একটির ভোটগ্রহণ স্থগিত হয়। বাকী ৪৩টির ফলাফল রাতেই ঘোষণা করা হয়।
ঘোষতি ফলাফল অনুযায়ী, ২০টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী, ১২টিতে স্বতন্ত্র, ১০টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এবং একটিতে খেলাফত মজলিশের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। একটি ইউনিয়নে ভোট স্থগিত হয়েছে। ১২ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ১০ জন বিএনপি দলীয় ও একজন জামায়াতের নেতা।
বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফলে সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁওয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান হিরণ মিয়া, কান্দিগাঁওয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা আবদুল মনাফ, জালালাবাদে আওয়ামী লীগের ওবায়দুল্লাহ ইসহাক ও হাটখোলায় খেলাফত মজলিসের মাওলানা রফিকুজ্জামান বিজয়ী হয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে ইসলামপূর পূর্ব ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা আলমগীর হোসেন আলম, তেলিখালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ আলফু, ইছাকলসে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাজ্জাদুর রহমান, উত্তর রণিখাইয়ে আওয়ামী লীগের ফয়জুর রহমান ও দক্ষিণ রণিখাইয়ে আওয়ামী লীগের ইকবাল হোসেন এমাদ বিজয়ী হয়েছেন।
বালাগঞ্জের ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে সদর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা মো. আব্দুল মুনিম, পূর্ব গৌরীপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান মুজিব, পশ্চিম গৌরিপুরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আবদুর রহমান মাখন, বোয়ালজোড়ে আওয়ামী লীগের আনহার মিয়া, দেওয়ানবাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির নাজমুল আলম ও পূর্ব পৈলনপুরে আওয়ামী লীগের শিহাব উদ্দিন বিজয়ী হয়েছেন।
মৌলভীবাজার: দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ৫ ইউনিয়নের মধ্যে একটিতে বিজয়ী হয়েছেন নৌকার প্রার্থী। ৪টিতেই নৌকার প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। এখানে ২টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও ২টি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র (বিএনপি) প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে পাওয়া ফলাফলে জানা গেছে, উপজেলার সাগরনাল ইউপিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুন নূর বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৭ হাজার ১৪৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঘোড়া প্রতীকে এমদাদুল ইসলাম চৌধুরী লিয়াকত পেয়েছেন ৫ হাজার ২২৭ ভোট।
পূর্বজুড়ী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ওবায়দুল ইসলাম রুহেল ঘোড়া প্রতীকে ৪ হাজার ৭৫৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সালেহ উদ্দিন আহমদ আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৮ ভোট। এই ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী আব্দুল কাদির তৃতীয় হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ১ হাজার ৫৪১ ভোট।
পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনফর আলী ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৬৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শ্রীকান্ত দাস নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৩৮ ভোট।
জায়ফরনগর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র (বিএনপি) প্রার্থী মাসুম রেজা ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৯ হাজার ৪৭৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাবিবুর রহমান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৮ হাজার ১০ ভোট। এই ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী জায়েদ আনোয়ার চৌধুরী তৃতীয় হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৩ হাজার ৭১ ভোট।
গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র (বিএনপি) প্রার্থী আব্দুল কাইয়ুম ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৭১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের শাহাব উদ্দিন লেমন নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৫০৩ ভোট।
সুনামগঞ্জ : দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জের দুই উপজেলায় ১৯টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ছাতক উপজেলায় ১০টি এবং দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৯টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
ছাতকের দশটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন চারজন প্রার্থী। এছাড়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী তিনজন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী তিনজন বিজয়ী হয়েছেন।
উপজেলার ছৈলা আফজালাবাদ ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে গয়াছ আহমদ, গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাওঁ ইউনিয়নে সুন্দর আলী, কালারুকা ইউনিয়নে অদুদ আলম এবং উত্তর খুরমা ইউনিয়নে বিলাল আহমদ বিজয়ী হয়েছেন।
ছাতক সদর ইউনিয়নে সাইফুল ইসলাম (আনারস) প্রতীক, দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জয়নাল আবেদীন (টেলিফোন) প্রতীক নিয়ে এবং জাউয়া বাজার ইউনিয়নে আব্দুল হক (ঘোড়া) প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে বিজয়ী হয়েছেন।
এছাড়া দোলারবাজার ইউনিয়নে নুরুল আলম (চশমা), চরমহল্লা ইউনিয়নে আবুল হাসনাত (মোটরসাইকেল) এবং সুফি আলম সোহেল (টেলিফোন) প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
এদিকে, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ৯ ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ৫টিতে, ৩টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এবং একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এম আবুল হোসেন (চশমা), নরসিংপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান নুর উদ্দিন আহমদ, দোয়ারা সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুল হামিদ, মান্নারগাঁও ইউনিয়নে (বিএনপিপন্থি) স্বতন্ত্র প্রার্থী ইজ্জত আলী (মোটরসাইকেল), পান্ডারগাঁও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহিদ, দোহালিয়া ইউনিয়নে (আ.লীগের বিদ্রোহী) স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীমুল ইসলাম শামীম (আনারস), লক্ষীপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী জহিরুল ইসলাম (মোটরসাইকেল), বোগলাবাজার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত মিলন খান এবং সুরমা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এম এ হালিম বীর প্রতীক বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।