ঢাকা, রবিবার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩রা অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সিলেটে ভাবীকে হত্যা, দেবরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

সিলেট ব্যুরো: | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১৯ জানুয়ারী ২০২৩ ১১:৩৪:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন


ভাবীকে গলা কেটে হত্যার দায়েরকৃত মামলায় এক যুগ পর দেবরের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের ঘোষনা দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়।

বুধবার  বিকেলে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক শায়লা শারমিন এ রায় ঘোষনা করেন।

দন্ডপ্রাপ্ত আসামীর সিলেটের বিয়ানীবাজার থানার বৈরাগীবাজার এলাকার আরিজ খাঁ টিলার মো: মইন উদ্দিনের পুত্র মো: কিবরিয়া (৪৫)। রায় ঘোষনার সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামী কিবরিয়া আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, আসামী কিবরিয়ার ভাই কুতুব উদ্দিন এর সাথে ঘটনার প্রায় ৩ বছর পূর্বে বিয়ানীবাজার থানার বৈরাগীবাজার এলাকার খশির ভেউলপাড়ের মৃত ইমাম উদ্দিনের কন্যা খালেদা আক্তারের (২২) ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। এরপর তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। ২০০৮ সালের প্রথম দিকে কুতুব উদ্দিন সৌদি আরব চলে যান। এরপর খালেদার সংসার চালানোর জন্য কুতুব উদ্দিন ভাই কিবরিয়ার কাছে টাকা-পয়সা পাঠাতেন। সে টাকা নামে মাত্র খালেদাকে খরচের টাকা দিত কিবরিয়া, যা দিয়ে খালেদার সংসারের খরচ চলতো না। এ নিয়ে দেবরের সাথে খালেদার বিভিন্ন সময় ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। ২০০৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী রাতে এ নিয়ে সালিশ বৈঠক হলে সেই বৈঠকে কিবরিয়া খালেদার পা ধরে মাফ চায় এবং সে ভবিষ্যতে এমন কাজ করবে না বলে অঙ্গীকার করে। ১৫ ফেব্রুয়ারী কুতুব উদ্দিন ৯ হাজার টাকা বিদেশ থেকে খালেদার কাছে পাঠান। এ টাকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওইদিন রাত ৯ টার দিকে মো: কিবরিয়া খালেদা আক্তারকে ছুরা দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে ঘরের ভেতর তার লাশ ফেলে রাখে। পরদিন খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে খালেদার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় নিহত খালেদার ভাই জাবের আহমদ বাদি হয়ে মো: কিবরিয়া (২২), তার মা আছারুন বিবি (৫৫), মছব্বির আরীর পুত্র নূর বকস্ (৪০), তার ভাই পাখি মিয়াকে (৩৫) আসামী করে বিয়ানীবাজার থানায় গণহত্যার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং- ৮ (১৬-০২-২০০৯)।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে একই বছরের ২০ মে বিয়ানীবাজার থানার এসআই মো: মজিবুর রহমান কিবরিয়া ও তার মা আছারুন বিবিকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার (অভিযোগপত্র-৬০) চার্জশিট দাখিল করেন এবং ২০১০ সালের ২৯ জুলাই থেকে এ মামলার বিচারকায্য শুরু করেন আদালত। মামলা চলাকালীন সময়ে চার্জশিটভূক্ত আসামী আছারুন বিবি মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘ শুনানী ও ১১ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামী মো: কিবরিয়াকে দ্যা পেনাল কোড ১৮৬০ এর ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে উল্লেখিত দন্ডাদেশ প্রদান করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে এডিশনাল পিপি এডভোকেট দিয়া ইয়াসমিন ও সহকারী এপিপি এডভোকেট মো: আব্দুস সাত্তার এবং আসামীপক্ষে এডভোকেট মোহাম্মদ মুহিবুর রহমান মামলাটি পরিচালনা করেন।