সৌদি আরবে সার কারখানা নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। বুধবার রাজধানী রিয়াদে এই কারখানার সম্ভাব্যতা ও কার্যকারিতা যাচাই (ফিজিবিলিটি স্টাডিজ) বিষয়ক একটি বৈঠক হয়েছে, সেই সঙ্গে একটি মেমোর্যান্ডম বা চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয় ও সৌদির বাংলাদেশি দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সেই বৈঠকে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশন এবং হানওয়া সৌদি কন্ট্রাক্টিং কোম্পানির প্রতিনিধিরা; বৈঠক শেষে স্বাক্ষরিত হয়েছে এই চুক্তি। বৈঠকেও ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত ছিল বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শরিফ মোহম্মদ মাসুদ আরব নিউজকে বলেন, সৌদিতে যে কারখানাটি নির্মাণ হতে যাচ্ছে, সেটিতে ডায়ামোনিয়াম ফসফেট সার প্রস্তুত করা হবে। প্রায় এক বছর ধরে সৌদি সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর বুধবারের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
‘ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ হতে সময় নেবে প্রায় ছয় মাস। রিপোর্ট আসার পরই সৌদি সরকারের সংঙ্গে কারখানা নির্মাণ সংক্রান্ত চুক্তি বিষয়ক আলোচনা শুরু হবে। আমরা আশা করছি, আগামী ২-৩ বছরের মধ্যেই আমরা কারখানা নির্মাণ করে উৎপাদন শুরু করতে পারব,’ আরব নিউজকে বলেন শরিফ মোহম্মদ মাসুদ।
বাংলাদেশের মোট উৎপাদনের অর্ধেকই আসে কৃষি থেকে। কৃষি উৎপাদনের জন্য রাসায়নিক সার অপরিহার্য, কিন্তু জ্বালানি সংকটের কারণে গত কয়েক বছর ধরে চাহিদা অনুযায়ী সার উৎপাদন করতে পারছে না বাংলাদেশের কারখানাগুলো।
শরিফ মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, ‘আমাদের বর্তমান যে চাহিদা, তার মাত্র ৩০ শতাংশ সার উৎপাদন করতে পারছি আমরা। জ্বালানি সংকটের কারণে অধিকাংশ কারখানা তার সামর্থ্য অনুযায়ী উৎপাদন করতে পারছে না।
সৌদিতে সার কারখানা নির্মাণের মূল কারণ—দেশটিতে জ্বালানি সহজলভ্য। যদি কারখানাটি প্রস্তুত করা হয়, তাহলে এটি হবে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে প্রথম বিদেশের মাটিতে নির্মিত কোনো কারখানা।
‘মূলত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর জন্যই আমরা এই কারখানা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। সৌদি সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কারখানাটি প্রস্তুত করা গেলে আমাদের কৃষকরা খুবই উপকৃত হবেন। দেশের চাহিদা মেটানোর পর উদ্বৃত্ত্ব সার বিদেশে রপ্তানি করা হবে,’ আরব নিউজকে বলেন বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব।