ঢাকা, শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ই আশ্বিন ১৪৩১

হাকিমপুরে ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

হিলি প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ২৯ এপ্রিল ২০২২ ০৯:০৬:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কাওসার রহমানের বিরুদ্ধে ঈদে দুস্থদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ১০ কেজি করে চাল বিতরণের কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে ৮ কেজি থেকে ৯ কেজি। চাল কম দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে গরীব ও দুস্থ উপকারভোগীরা। এবিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

আজ শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সরেজমিনে খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, পবিত্র ঈদুর ফিতর উপলক্ষে গরীব ও দুস্থ মানুষদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ইউএনও’র প্রতিনিধি হিসেবে একজন ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে চাল বিতরণের কথা থাকলেও সেখানে তার দেখা মেলেনি। দাঁড়িপাল্লা বা ডিজিটাল ওজনে চাল দেওয়ার পরিবর্তে প্লাস্টিকের বালতিতে করে অনুমান করে চাল দেওয়া হচ্ছে। যা চাল পাওয়া উপকারভোগী কয়েকজনের চাল পুনরায় ডিজিটাল ওজনে মাপা হলে কেউ ৮ কেজি আবার কেউ ৯ কেজি করে চাল পেয়েছেন। পরে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে কয়েকজনের বালতির চাল ওজন করে ৯ কেজি  ৬’শ গ্রাম করে পাওয়া যায়।

চাল পাওয়া সিরাজুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার সকালে আমি ও আমার ভাইরার পাওয়া দুটি কার্ডের চাল ইউনিয়ন পরিষদে তুলতে আসি। পরে চাল তুলে বাহিরে ওজন করে দেখি ৯ কেজি। আমরা দুইজন ১৮ কেজি পেয়েছি। যা ২ কেজি কম। তারা ডিজিটালে ওজন না করে বালতিতে করে দেওয়ায় ১ কেজি করে কম দিয়েছে। উপকারভোগী ফরহাদুল ইসলাম বলেন, চাল নিয়ে পাশের দোকানে মেপে দেখি ৮ কেজি। ১০ কেজি দেওয়ার কথা। তারা তাদের ইচ্ছামত চাল দিচ্ছে। জনগনের কোন দাম নেই। এখানে তারা যা বলছে তাই করছে।

আরেক উপকারভোগী সুমন বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু তারা ৮ কেজি করে চাল দিচ্ছে। আমরা ২ কেজি করে চাল কেন কম নিব। আমাদের ১০ কেজি করে চাল বুঝিয়ে দিক। চেয়ারম্যান কাউকে ৮ কেজি, আবার কাউকে সাড়ে ৮ কেজি, ৯ কেজি করে চাল দিচ্ছে।

চাল পাওয়া আরজেনা বেগম বলেন, ঈদ উপলক্ষে চেয়ারম্যান চাল দিলো সেই চাল নিয়ে গিয়ে মেপে দেখি সাড়ে ৮ কেজি হয়েছে। চাল নিয়ে আসতে আসতে ওখানেই দেড় কেজি চাল নাই। চাল কম হলে আমরা গরীব মানুষ খাবো কিভাবে চলবো কিভাবে। 

এবিষয়ে জানতে চাইলে খট্টামাধবপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান কাওসার রহমান বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আমার ইউনিয়নে ৪ হাজার মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ৪০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ পেয়েছি। সেই অনুযায়ি চাল বিতরণ করা হচ্ছে। তবে আমার এখানে চাল কম দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। আর ৮ কেজি সাড়ে ৮ কেজি হওয়ার সুযোগ নেই। যেহেতু ৪ হাজার মানুষকে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ঈদ চলে আসছে যার কারণে আমাদের হাতে সময় কম। সেই কারণে শুক্রবার ছুটির দিনেও চাল বিতরণ কার্যক্রম চালাচ্ছি। হয়তোবা দু-একশো গ্রাম চাল কমবেশি থাকতে পারে।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, ঈদ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে প্রত্যেককে ১০ কেজি করে চাল দিবে এটাই নিয়ম। কিন্তু কেন চাল কম দেওয়া হচ্ছে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।