ঢাকা, রবিবার ১৯ মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

‘প্রতিকূলতা’ পেরিয়ে দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:৫৬:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ দিনের সফর শেষে বুধবার দেশে ফিরছেন। এবার দেশের বাইরে থাকার সময় বেশ কিছু বৈরী পরিবেশ তৈরির চেষ্টা হয়েছে দেশে বিদেশে। দক্ষ হাতে সেই প্রতিকূল পরিস্থিতি সামাল দিয়ে তিনি দেশে ফিরছেন।

 

গত ১৭ সেপ্টেম্বর দেশ ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে ২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশ নেন। সেখান থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর লন্ডনে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। লন্ডন থেকে বুধবার দেশে ফিরছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনেকগুলো আন্তর্জাতিক পদ পাওয়ায় এবার বিমানবন্দর থেকেই প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা থাকলেও জনদুর্ভোগ চিন্তা করে তিনি সংবর্ধনায় সম্মতি দেননি বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

 

এবারের জাতিসংঘের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ জনগণের মানবাধিকার রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। এ দেশ সংবিধানের আলোকে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে যাবে। তিনি বলেন, জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের আপামর জনগণের মানবাধিকার সংরক্ষণে সদস্যদেশগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বরাবরের মতো বাংলায় দেওয়া এই ভাষণে তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞা পরিহার, জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য আঞ্চলিক খাদ্য ব্যাংক চালু, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসেবা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি), সন্ত্রাসবাদ এবং সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অন্যান্য বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

 

বাইডেনের সঙ্গে নৈশভোজ

 

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে (ইউএনজিএ) যোগদানকারী বিশ্ব নেতাদের সম্মানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে স্থানীয় সময় ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্টে এই নৈশভোজের আয়োজন করেন বাইডেন। ভোজসভায় শেখ হাসিনা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে এবং ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) থিম্যাটিক অ্যাম্বাসেডর সায়মা ওয়াজেদ তাঁর সঙ্গে ছিলেন। নৈশভোজে বাইডেনের সঙ্গে ছবি প্রকাশ করা হয়।

 

নিউইয়র্কে সংবাদ সম্মেলন

 

প্রধানমন্ত্রী যখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছে তখনই খবর আসে ভিসানীতি বাস্তবায়ন শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তোলপাড় শুরু হয় দেশে। জাতিসংঘে ভাষণ দেওয়ার পর নিউ ইয়র্কে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি আরোপ শুরু প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে ভয় পাওয়া বা ঘাবড়ানোর কিছু নেই। এবার বিরোধী দলের কথাও বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যারা নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাদের বলব, একসময় ১০ হোন্ডা ২০টা গুন্ডায় নির্বাচন হতো। এখন সেই পরিবেশ নেই। বিএনপি এক কোটি ভুয়া ভোটার করেছিল। খালেদা জিয়া ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন করে ক্ষমতায় এসেছিলেন বলে দেড় মাসও টিকতে পারেননি, জনগণের আন্দোলনে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ কারও ওপর নির্ভর করে নয়, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে। জনগণ ভোট দিলে আবার ক্ষমতায় আসবে।

 

লন্ডনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

 

সোমবার (২ অক্টোবর) লন্ডনের স্থানীয় সময় বিকালে সেন্ট্রাল লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার এলাকার ম্যাথডিস্ট চার্চ হলে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সংবর্ধনার আয়োজন করে। সংবর্ধনা সভায় যোগ দিতে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জড়ো হন। লন্ডনের বাইরের দূরদূরান্তের শহর ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকেও এই সভায় যোগ দিতে আসেন অনেকে। বক্তৃতায় অগ্নি সন্ত্রাস করে মানুষকে হত্যা আর দেশের সম্পদ ধ্বংস করাই বিএনপির আন্দোলন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। আন্দোলনের নামে তারা যদি দেশের মানুষকে আবার অত্যাচার করতে চায় তাহলে তাদের কোনও ছাড় নেই। যেকোনও মূল্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রাখার কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।