ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ভোর থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত ইলিশের আশায় জাল ফেলেও জেলেদের জালে দেখা মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশের। আশানারূপ ইলিশ না পেয়ে হতাশ হয়ে তীরে ফিরছেন জেলেরা। যে দু’চারটি ইলিশ ধরা পড়ছে তা বিক্রি করে জেলেদের ট্রলারের তেলের খরচও উঠছে না। তবে মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন বৃষ্টি বাড়লেই ধরা পড়বে ইলিশ।
বুধবার (১ জুন) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি, রাজাপুর ইউনিয়নের জনতা বাজার ও ইলিশা ইউনিয়নের জংশন এলাকায় জেলেদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানা যায়।
ধনিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জেলে মো. সাব্বির মাঝি ও মো. হাসান মাঝি বলেন, ‘সকাল ৭-৮টার দিকে আমরা ১৪ জন জেলে মাছ শিকার করতে নদীতে যাই। বিকেল পর্যন্ত নদীতে জাল বাইছি। ৪৫ লিটার ডিজেল পোড়াইছি। এতে প্রায় ৪ হাজার ৫শ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু ছোট বড় মিলে ইলিশ পাইছি ৮টি। তুলাতুলি ঘাটে নিয়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করছি। তেলের দোকানে এখনও ১ হাজার টাকা দেনা।’
তুলাতুলি গ্রামের জেলে আব্দুল মালেক মাঝি বলেন, ‘প্রতিদিন নদীতে মাছ ধরতে যাই, কিন্তু নদীতে মাছ নেই। গতকাল (মঙ্গলবার) পাইছি মাত্র ১৫০ টাকা। এর মধ্যে সমিতির কিস্তির লোকজন বাড়িতে আইয়ে টাকা আদায় করতে। বউ বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে সরে গেছে। আমিও নদীর পাড়ে পাড়ে ঘুইরা বেড়ায়। কী করমু, আমরা গরিব মানুষ।’
তুলাতুলি মৎস্য ঘাটের আড়তদার মো. ইউনুস জানান, জৈষ্ঠ্য মাস শেষে আষাঢ় মাস চলে আসছে প্রায়। এখনও নদীতে জেলেরা ইলিশ পাচ্ছে না। যার কারণে অনেক জেলে নদীতে ঠিকমতো যাচ্ছেও না। জেলেরা নদীতে ভালো মাছ না পাওয়ায় আমরা আড়তদাররা মাছ ক্রয়-বিক্রয় করতে পারছি না। সারাদিন ঘাটে বসে থেকে ২০-৩০টি মাছ কিনতে পারি। বরিশাল ও ঢাকার মোকামেও ঠিকমতো মাছ পাঠাতে পারি না।
ভোলা সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জামাল হোসাইন জানান, বর্তমানে জেলেদের জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মিলছে না। তবে বৃষ্টি বাড়লে নদীতে ইলিশের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও এ সময়টায় নদীতে প্রতি বছরই ইলিশের পরিমাণ কম থাকে। আগস্ট থেকে ইলিশের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে।