রাত পোহালেই ১৫ জুন ভোট গ্রহণ করা হবে বিয়ানীবাজার পৌরসভার মেয়র ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন। ফলে বিয়ানীবাজার পৌর এলাকার ১০ কেন্দ্রের ৯টিই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়েছে। আর গোলাপগঞ্জে ১০২ কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৯৩টি।
নির্বাচনী এলাকা দু’টিতে ইভিএমে অনুষ্ঠিত হবে ভোট। ফলে ভোটের দিন ইভিএম শঙ্কায় প্রশাসন বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়েছে। ভোট গ্রহণের কেন্দ্রগুলিতে ১ হাজার ২৫৫ জন পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি ২ হাজার ৪২১ জন আনসার সদস্যও দায়িত্ব পালন করবেন।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি অ্যান্ড মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ভোটের দিন প্রতিটি কেন্দ্রে ৫ জন করে পুলিশ স্ট্যান্ডবাই ডিউটিতে থাকবেন। সঙ্গে থাকবে নারী ও পুরুষ আনসার সদস্যরা। সড়কের মোড়ে মোড়ে তল্লাশি চৌকি (চেকপোস্ট) বসানো হবে ১৮টি। গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) কেন্দ্র বিবেচনায় ভোটের দিন ৪৭টি মোবাইল টিম কাজ করবে। প্রতি ৩টি কেন্দ্রে ১টি মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করবে। থাকবে ৬টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ও ডিবির ৪টি টিম। এছাড়া র্যাব-৯ সদস্যরাও তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন।
সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌরসভার নির্বাচনী কর্মকর্তা সৈয়দ কামাল হোসেন বলেন, এখানে মোট ২৭ হাজার ৭৯০ জন ভোটার ১০টি কেন্দ্রে ৮০টি বুথে ভোট দেবেন। ভোটারদের মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ৮৭০ জন এবং নারী ভোটার ১৩ হাজার ৯২০ জন।
তিনি বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে ইভিএম দ্বারা ভোট গ্রহণ করা হবে। প্রতি কক্ষে থাকবে একটি করে ইভিএম মেশিন। তবে ৮০টির স্থলে ১২০টি ইভিএম মেশিন সরবরাহ রাখা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে বাড়তি মেশিন দেওয়া হবে, যাতে বিড়ম্বনায় পড়তে না হয়। এছাড়া কারিগরি ত্রুটি সারাতে ৩টি টিম নির্বাচনী মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। আর প্রতিটি কেন্দ্রে ও বাইরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার সাইদুর রহমান বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২ প্রার্থী। মোট ভোটার ২ লাখ ৪০ হাজার ১০০ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ২২ হাজার জন নারী এবং ১ লাখ ১৮ হাজার ৩ জন পুরুষ। তারা মোট ১০২টি কেন্দ্রে ৬২৫টি কক্ষে ভোট দিয়ে নিজেদের কাঙ্খিত জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন। উপজেলায় শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১৩ জুন) রাত ১২টা থেকে প্রচারণার সময় শেষ হয়ে গেছে। মঙ্গলবার (১৪ জুন) কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো শুরু হবে।
গোলাপগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম ক্ষমতাসীন দলের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী একই দলের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শফিক উদ্দিন চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।
অন্যদিকে, বিয়ানীবাজার পৌরসভায় নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের আব্দুস শুকুরের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন দলীয় ৩ বিদ্রোহীসহ ৭ জন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আহবাবুর রহমান (কম্পিউটার), মো. আব্দুল কুদ্দুছ (হেলমেট) ও সাবেক পৌর প্রশাসক তফজ্জুল হোসেন (জগ), জাতীয় পার্টির মো. সুনাম উদ্দিন (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির মোহাম্মদ আবুল কাশেম (কাস্তে), স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুস সামাদ আজাদ (হ্যাঙ্গার), মোহাম্মদ অজি উদ্দিন (নারিকেল গাছ), মোহাম্মদ আব্দুস সবুর (মোবাইল ফোন) এবং ফারুকুল হক (চামচ)।
এদিকে একই দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার দুটি ইউনিয়ন কাজলসার ও সুলতানপুরে। উভয় ইউপিতে ১০টি করে কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।