ঢাকা, শনিবার ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮শে পৌষ ১৪৩১

কলহের জেরে স্ত্রী ও সন্তানকে পাষন্ড পিতার হত্যা,র‍্যাবের হাতে আটক ঘাতক

মু.ওয়াহিদুর রহমান মুরাদ,লক্ষ্মীপুর : | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ৫ মে ২০২৩ ০৪:১০:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

 

 
পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করে পলাতক পাষন্ড স্বামী জামালকে র‍্যাব আটক করেছে।
 
র‍্যাবের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২০ই এপ্রিল  ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করা হয় যেখানে একজন নারী ও একজন শিশু কন্যা নিখোঁজ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে নিখোঁজ মহিলার স্বজনেরা এসে নিহত নারীকে রওশন আরা বেগম এবং শিশুটিকে তার মেয়ে নুসরাত হিসেবে সনাক্ত করে। নিহত নারীর পিতার নাম কেরামত আলী ,গ্রামের বাড়ি আজোলবেড়ার কোতায়ালী থানার ফরিদপুর জেলায়। 
 
 এ বিষয়ে রামগঞ্জ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। হত্যা মামলা রুজু হওয়ার পরপরই র‍্যাব উক্ত ঘটনা সম্পর্কে ছাঁয়া তদন্ত শুরু করে। এ ঘটনার জন্য নিহত রওশন আরা বেগমের স্বামী মোঃ জামাল উদ্দিনকে প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ করা হয়।কিন্তু সে আত্মগোপনে থাকার তাকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৪ই মে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকার শ্যামপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী দক্ষিণ মতলবের বহুরীগ্রামের রুহুল আমিন এর ছেলে  মো: জামাল উদ্দিন (৪১) কে গ্রেফতার করা হয়।
 
র‍্যাব-১১ সিপিসি -৩ , কোম্পানি কমান্ডার মাহামুদুল হাসান গণমাধ্যমে শুক্রবার সকালে প্রেস ব্রিফ্রিংকালে জানান,প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, হত্যাকাণ্ডের শিকার রওশন আরা বেগম আসামী জামাল উদ্দিনের ২য় স্ত্রী। ২০১৯ সালে জামাল রওশন আরা কে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে আসামি ঢাকার রায়েরবাগ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে স্ত্রী রওশন আরা এর সাথে বসবাস করে আসছিলো। পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে জামাল উদ্দিন ও তার স্ত্রীর মাঝে সর্বদা দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকতো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে জামাল উদ্দিনের সাথে তার স্ত্রীর সাথে দাম্পত্য কলহ শুরু হলে এক পর্যায়ে জামাল ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্ত্রীর গলাটিপে ধরে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। স্ত্রী কে হত্যার পর জামাল তার ঘুমন্ত শিশু কন্যা নুসরাত (১) এর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে। তারপর তার স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে গুম করার উদ্দেশ্যে ঘরে থাকা কাঠের আলমারিতে ভরে রাখে। পরবর্তীতে ঘাতক জামাল তার পূর্বপরিচিত একটি পিক আপ ভাড়া করে লাশ দুইটি আলমারির ভিতরে রেখেই পিক আপের ড্রাইভার হেলপার ও জনৈক এক ভাড়াটিয়া ব্যক্তির সহায়তায় সর্বমোট ৪ জন মিলে বাসার জিনিসপত্র নোয়াখালীতে নিয়ে যাবে বলে একটি পিকআপে তোলে। তারপর তার স্ত্রী ও শিশু কনার লাশ রাত আনুমানিক ০৩.৩০ ঘটিকার সময় রামগঞ্জ বাজারের পূর্ব পার্শ্বে মহাসড়কে কালভার্টের নিচে ফেলে আত্মগোপনে চলে যায়। আসামীকে রামগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
 
উল্লেখ্য,গত ১৯ এপ্রিল ২০২৩ তারিখ লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ভাদুর ইউনিয়নের রামগঞ্জ চাটখিল সড়কের হৈইলাকুয়া ব্রীজের নিচে  কন্যা শিশু ও  মহিলার লাশ পাওয়া যায়। লাশগুলো উদ্ধার করে প্রাথমিক ভাবে লাশ দুটিকে মা ও মেয়ে হিসেবে ধারনা করা হয় তাৎক্ষনিক।