ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

চালের দাম নিয়ন্ত্রণে কাজে আসছে না সরকারি উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : শনিবার ৩০ জুলাই ২০২২ ০৮:১৯:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

দেশের বাজারে বাড়তে থাকা চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারি উদ্যোগ কাজে আসছে না। খোলাসা করে বলতে গেলে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান, আমদানির অনুমতি, শুল্ক হ্রাসসহ সরকার নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও কার্যত নিয়ন্ত্রণহীন চালের বাজার।

গত তিন-চার দিনের ব্যবধানে মিনিকেট ও নাজিরশাল চালের দাম কেজিতে এক থেকে দুই টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এদিকে, আমদানির অনুমতি থাকলেও ডলার সংকট ও দাম বেশির কারণে আমদানিতে গতি নেই। ব্যবসায়ীরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বাড়তি দামে বড় চালানে চাল আমদানিতে। যে কারণে দেশের বাজারে চালের দামও বেড়েছে।

শনিবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর বাবুবাজার, বাদামতলী, রায়সাহেব বাজার, সূত্রাপুর বাজারসহ কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চালের ভরা মৌসুমেও দেশের বাজারে এ খাদ্য পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যবসায়ীদের কম শুল্কে চাল আমদানির সুযোগ দিয়েছে সরকার। চার দফায় এ পর্যন্ত ৯ লাখ ১০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। তারপরও রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম কমেনি।

খুচরা বাজারে কেজিতে এক থেকে দুই টাকা বেড়েছে প্রায় সব ধরনের চালের দাম। প্রতি কেজি মিনিকেট চাল মান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬৬ থেকে ৭২ টাকায়। সে হিসেবে প্রতি বস্তা চাল ৩৩০০ থেকে ৩৬০০ টাকা। তিন-চার দিন আগে এর দাম ছিল ৬৬ থেকে ৭০ টাকা। কেজিতে দুই টাকা বেড়ে নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭৪ থেকে ৮২ টাকায়। আর এক বস্তা চাল ৩৭০০ থেকে ৪১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

বিআর-২৮ জাতীয় চাল কেজিতে দুই টাকা বেড়ে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এক বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২৮০০ থেকে ২৯০০ টাকায়। তবে মোটা চালের ক্ষেত্রে দাম অপরিবর্তিত দেখা গেছে। এ মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫২ টাকা কেজি দরে।

সপ্তাহ ব্যবধানে পাইকারিতে মোটা চাল ৫০ কেজির বস্তায় ২৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। মিনিকেটের দাম বেড়েছে বস্তা প্রতি ১০০ টাকা পর্যন্ত। পাইকারিতে এখন মোটা চাল বি-২৮ ও পাইজাম ৫০ কেজির বস্তা ২৪০০ থেকে ২৬০০ টাকা, চিকন চাল মিনিকেট বস্তা তিন হাজার থেকে ৩২৫০ থেকে ৩৪০০ টাকা এবং নাজিরশাইল ৫০ কেজির ৩৫০০ থেকে ৩৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বাজারে চালের সংকটের কারণে সরকার শুল্ক কমিয়ে আমদানির অনুমতি দিয়েছিল। এখন ডলারের দাম বাড়ার কারণে সাহস পাচ্ছেন না আমদানিকারকরা। তবে যেসব প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে আমদানি করে চাল নিয়ে এসেছে, সবাই ধরা খেয়েছে। ফলে আমদানি করা চালের দাম বেশি বলে দেশের বাজারে মূল্য কমছে না। বরং বাজারে দাম বাড়ছে। যদিও খাদ্য মন্ত্রণালয় আশা করেছিল, চাল আমদানি শুরু হলেই দেশের প্রধান এই খাদ্য পণ্যের দাম কমতে শুরু করবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ীদের আমদানিতে আগ্রহ কম। দেশে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এরই মধ্যে ভারত থেকে ১২ হাজার ২২৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে। কিন্তু বাজারে চালের দাম না কমে উল্টো বাড়তে শুরু করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, কোন বন্দর দিয়ে কত টন চাল আমদানি হয়েছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। আমদানির পুরো তথ্য পাওয়া সময়সাপেক্ষ। চালের দাম বাড়ার কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। আমাদের প্রতিদিন বাজার দর মনিটরিং হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। হয়তো স্থানভেদে ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকা দামের হের ফের হতে পারে।