ঢাকা, শুক্রবার ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬শে পৌষ ১৪৩১

ছাড়পত্র পেলেই চীনা প্রযুক্তিতে চমেক বার্ন ইউনিট প্রকল্পের কাজ শুরু হবে: পরিচালক

মো. এনামুল হক লিটন, চট্টগ্রাম | প্রকাশের সময় : বুধবার ৮ জানুয়ারী ২০২৫ ০৬:০২:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট নির্মাণ প্রকল্পে পাহাড় কাটার অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি নজরে আসার পরপরই স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও পরিবেশ উপদেষ্টার নির্দেশে প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখা হয়।

এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তছলিম উদ্দীন পাহাড় কাটার কথা স্বীকার করেন এবং এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি বলে জানান।  

বুধবার (৮ জানুয়ারি) চমেক হাসপাতাল পরিচালকের সভাকক্ষে অংশীজনদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করবো। ছাড়পত্র পেলে সে অনুযায়ী কাজ করবেন উল্লেখ করে বলেন, ভৌত অবকাঠামোগত কাজ করার আগে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়কে ঢালু আকারে কেটে এতে চীনা প্রযুক্তি ব্যবহার করে কলাম বসানো হবে। এর ফলে ভবিষ্যতে পাহাড় ধসের শঙ্কা কমে আসবে। যে জায়গায় পাইলিং করা হবে সেখানে উন্নতমানের ঘাস লাগানো হবে। যাতে বৃষ্টি হলে তা গড়িয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে নিষ্কাশন করা যায়।  

তিনি আরও জানান, এ প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২ বছর। কিন্তু চীনা প্রতিনিধি দল নির্ধারিত সময়ের আগে এই কাজ শেষ করে ফেলতে পারবে বলে জানিয়েছে। তাদের হিসেব অনুযায়ী, ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।  

তবে অংশীজন এ সভায় উপস্থিত ছিলেন না পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো প্রতিনিধি। ফলে এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে প্রকল্পের চীনা প্রতিনিধি দলেন প্রধান মে ইইউ চ্যং বলেন, পাহাড়টা দেখার পর মনে হয়েছে- পাশে ভবন হলে জায়গাটি নিরাপদ হবে না। কারণ ভবনে বেইজ করার সময় পাহাড় ধসে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। পাহাড়ের মাটিগুলো খুবই নরম। পানির স্পর্শ পেলে নিচের দিকে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রকৌশলীরা সয়েল নেইলিং প্রযুক্তির মাধ্যমে পাহাড়টি ড্রেসিং করে কলাম বসিয়ে কাজ করবে এবং সেখানে ঘাস রোপণ করা হবে।  

পরিবেশবাদী সংগঠন বেলা চট্টগ্রামের ফিল্ড অফিসার ফারমিন এলাহী বলেন, গত বছরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়েছিল। তখন তারা বলেছিলেন, পাহাড় রক্ষা করে কাজ করবেন। বুধবার আবার তারা বলছেন, পাহাড় ধসে পড়ার কারণে তারা পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছেন। যেকোনও প্রকল্প করতে হলে পরিবেশগত প্রভাব পর্যালোচনা (ইআইএ) করতে হয়। কিন্তু ইআইএ না থাকায় আমরা অবাক হয়েছি। চমেক হাসপাতালের মতো একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান থেকে এ ধরনের অবহেলা আশা করা যায় না। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ রাখা হয়েছে, সৌন্দর্যবর্ধক গাছের সঙ্গে দেশিয় প্রজাতির গাছও লাগাতে হবে।

এর আগে বার্ন ইউনিট প্রকল্প এলাকায় পাহাড় কাটার ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই তড়িঘড়ি করে এই অংশীজন সভা ডাকে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

২০২৪ সালের ৯ মে একনেকে অনুমোদন পায় ১৫০ শয্যার বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট নির্মাণ প্রকল্প । নগরের চট্টেশ্বরী রোডে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রাবাসের পশ্চিমে গোয়াছি বাগান এলাকায় ২৮৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পের মধ্যে চীন সরকার অর্থায়ন করবে ১৮০ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার দেবে ১০৫ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় একটি ছয়তলা ভবন নির্মিত হবে।

বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএইচ