কোটচঁদপুর পৌরসভায় গত ২৪ বছর যাবত পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হক দায়িত্বে থাকা কালিন
অধিকাংশ মেয়রদের যোগসাজসে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের
অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে জানা যায়, এসব দুর্নীতির মধ্যে আছে মন্ত্রানালয় থেকে ২০১৫
সালে বিশেষ বরাদ্দের ৮৫ লাখ টাকা কোন কাজ না করেই ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ
, পৌরসভার বিভিন্ন হাট বাজারের নিয়ম বহিরভূতভাবে নামে মাত্র টেন্ডার দেখিয়ে প্রায় ৬৬ লাখ টাকা
ভাগবাটোয়ারা, পৌরসভায় বিভিন্ন সময় মন্ত্রনালয়ের ছাড়পত্র ছারাই অবৈধভাবে প্রায় কোটি টাকার
কর্মচারী নিয়োগ বানিজ্য। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায় ১৮৮৩ সালে প্রাচীনতম এ পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত
হয়ে প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় উন্নীত হলেও পৌরনাগরিকরা নূন্যতম তৃতীয় শ্রেনীর পৌরসভার
সুবিধাও ভোগ করতে পারেন না। পৌরবাসিদের নিকট থেকে সর্বচ্চ পৌর কর আদায় করলেও রাতের
বেলায় অধিকাংশ বিদ্যুৎ পোলে আলো নাথাকায় রাস্তাঘাট থাকে ভূতুরে অন্ধকার। শহরে ময়লা
আবরজনা পরিস্কারের সুব্যবস্থা না থাকায় এলাকায় ময়লার ভাগারে পরিনত হয়েছে। হাসপাতালের
মত গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় রাস্তাঘাটে ভাঙাচোরা গর্তে বর্ষার পানি জমে বেহাল দশা। পরিকল্পিত ড্রেনেজ
ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে মানুষ। পৌরসভার অফিসের সামনে সিটিজেন
চার্টার না থাকায় পৌরবাসিকে যেকোনো সনদ নিতে গেলে ৫শ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত গুনতে
হয়। এসব দুর্নীতিন ও অনিয়মের মুল হোতা পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল ফজল মোহাম্মদ এনামুল
হক । তিনি চৌগাছা উপজেলার প্রভাবশালী এক আওয়ামী নেতার ভাই, এই দম্ভে বেপরোয়াভাবে
দীর্ঘ ২৪ বছর একই পৌরসভায় থেকে যে মেয়র যখন ক্ষমতায় এসেছেন তার সাথে যোগসাজসে
দুর্নীতি অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিভিন্ন ফাÐের টাকা আত্মসাত করেছেন। সূত্রটি আরও
জানায় এসব কারনে পৌর কর্মচারীদের ৪৪ মাসের বেতন এবং বিদ্যুৎ বিলসহ ৮ কোটি টাকার উপরে
বকেয়া আছে। এসব বকেয়া পরিষোধের জন্য ৩ মাস সময় বেধে দিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ৮৬১
নং স্মারকে গত ১৩-০৬-২০২৪ তারিখে পৌর মেয়রের নিকট এক প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এতে
উল্লেখ করা হয় পৌর কর্মকর্তা কর্মচারীদের ৪৪ মাসের বেতন-ভাতা বাবদ ৫,৮৭,৯৬,৯২৯ টাকা ও
আনুতোষিক বাবদ ৫,১৩,৬৮,৮৩৮ টাকা। বিদ্যুৎ বিল বাবদ ২,২৪,২৪,৩৮২ টাকা এবং বিএমডিএফ
হতে ঋণ বাবদ ৪৭,৯৯,৫৮১ টাকা বকেয়া আছে। বকেয়া থাকা সত্বেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে স্থানীয়
সরকার, পল্লীউন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় পৌরসভার কার্যμম ও জনসেবায় উৎসাহিত করার লক্ষে
১০ লাখ টাকা বিশেষ বরাদ্দ প্রদান করেছেন। এমতাবস্থায় আগামী ৩ মাসের মধ্যে সমুদয় বকেয়া
পরিষোদ করা না হলে আর কোনো বরাদ্দ প্রদান করা হবে না বলেও জানান। এদিকে পৌরসভার অর্থ
আত্মসাৎ এবং কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিষোদ না করা প্রসঙ্গে তদন্ত শুরু করছেন স্থানীয় সরকার
মন্ত্রনালয়, ঝিনাইদহের উপপরিচালক রথীন্দ্র নাথ রায়। এ অবস্থায় বৈাসম্য বিরধী ছাত্র আন্দলনে
আওয়ামী সরকার পতনের পর থেকে পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হক দীর্ঘ ছুটির অযুহাতে
দীর্ঘদিন পলাতক আছেন বলেও সূত্রটি জানায়। এব্যাপারে কথাবলার জন্য এনামুল হকের একাধিক
মোবাইল নাম্বারে ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে কথা হয় সদ্য ক্ষমতাচ্যুত পৌর মেয়র
শহিদুজ্জামান সেলিমের সাথে , তিনি সংবাদ প্রতিনিধিকে জানান আমি মেয়র থাকা কালিন পৌরসভায়
কোন দুর্নীতি হয়নি। সাবেক মেয়রদের দুর্নীতি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের বেতন বকেয়া বিদ্যুৎ বিল
বকেয়া সব আমার ঘাড়ে চাপানো হয়েছে। আমি দায়িত্ব নেবার পর অনেক সাবেক জের বকেয়া
পরিষোদ করেছি। এলাকার পৌরবাসি দুর্নীতিমুক্ত একটি পৌরসভা গঠনের লক্ষে সংস্কারবাদীদের
নিকট জোর দাবি জানান।