গাজীপুরের টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের ৫টি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে টানা তিন দিন মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে শ্রমিকদের বিক্ষোভের পর ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এতে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে তিনদিন পর যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে রাস্তায় যাত্রী সংখ্যা বেশি ছিল। অন্যদিকে মহাসড়ক থেকে অবরোধকারী শ্রমিকরা সরে গেলেও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সমঝোতা হওয়ার পরও খোলেনি গাজীপুরের টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের ৫টি পোশাক কারখানা। বন্ধ আছে কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ। আজ মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা কাজে এসে গেইট বন্ধ পেয়ে ফিরে গেছেন।
কারখানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শ্রমিকদের বকেয়া বেতনসহ মালিক ও কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যার কারণে কারখানার বিদ্যুৎ দিল বকেয়া পড়েছে। কারখানার পাওনা মেটাতে তাদের একটি প্রতিষ্ঠান বিক্রি করতে হয়েছে বলেও জানা গেছে।
শ্রম ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিবের হস্তক্ষেপে শ্রমিক আন্দোলনের বিষয়টি সমাধান হলেও কারখানার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে। বিদ্যুৎ বকেয়া থাকার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে ইচ্ছে থাকলেও কারখানা খোলা সম্ভব হচ্ছে না। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দুপুরের পর নোটিশ আকারে শ্রমিকদের জানিয়ে দেয়া হবে কারখানা কবে খোলা হবে।
কারখানার মহাব্যবস্থাপক কবির আহম্মেদ বলেন, কারখানা খোলার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এছাড়া বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগও বন্ধ আছে। কারখানা কবে খোলা হবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে দুপুরের মধ্যেই। এবং সেই সিদ্ধান্ত নোটিশ আকারে শ্রমিকদের জানিয়ে দেয়া হবে। তবে কারখানার নিরাপত্তাকর্মী মোস্তফা হোসেন বলেন, খোলার কোন নোটিশ এখনো পাইনি। স্যারেরা আসলে হয়তো নোটিশ টানিয়ে দিবে।
প্রসঙ্গগত, বকেয়া বেতনের দাবিতে গত শনিবার থেকে টানা তিন দিন শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতে শ্রম ভবনে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে টিএনজেড গ্রুপের ৩১ জন শ্রমিক প্রতিনিধি, বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দ ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সর্বসম্মতিক্রমে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে বলা হয়, আগামী ১৭ নভেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের সেপ্টেম্বর মাসের এবং ৩০ নভেম্বর অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে। কারখানাগুলো কর্তৃপক্ষ দ্রুত খুলে দিবে। এছাড়া ৩০ নভেম্বরের আগে কেউ যদি আবারও রাস্তা অবরোধ করে তাহলে টাকা পরিশোধ করা হবে না বলেও জানানো হয় বৈঠক থেকে। তবে শিল্পনগরী গাজীপুরে অন্যসব গার্মেন্টসে স্বাভাবিকভাবেই উৎপাদন কার্যক্রম সচল রয়েছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন বলেন, টিএনজেড অ্যাপারেলস কারখানা বন্ধ থাকলেও আশপাশের সব কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেছে। সকাল থেকে কোনো ঝামেলার খবর পাওয়া যায়নি।
বায়ান্ন/এসএ