ঢাকা, রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন : ময়মনসিংহে আওয়ামীলীগ ১৪, স্বতন্ত্র ১১, জাপা ১

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : সোমবার ২৯ নভেম্বর ২০২১ ০৫:০৩:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

তৃতীয় ধাপে ময়মনসিংহের সদর, মুক্তাগাছা ও ত্রিশাল উপজেলার ২৭ ইউনিয়নে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে নৌকা ১৪ টিতে, বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র মিলে ১১ টি এবং একটিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। ত্রিশারের রামপুর ইউনিয়নে ফলাফল স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

মুক্তাগাছা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫টিতে নৌকা প্রতিক নিয়ে আওয়ামীলীগ, ৪টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী ও একটিতে বিএনপি স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ি হয়েছেন। 

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দা শারমিন সুলতানা জানান, দিনভর শান্তিপুর্ণ ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটে বিভিন্ন ইউনিয়নের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।

১নং দুল্লা ইউনিয়নে হোসেন আলী হুসি (আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী) আনারস প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৬৮৭২ ভোট নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামীলীগের সিরাজুল ইসলাম নৌকা প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৪৫৭৯ ভোট।

২নং বড়গ্রাম ইউনিয়নে

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জাহান আলী(স্বতন্ত্র) ঘোড়া প্রতিক নিয়ে ৭৩৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামীলীগের মো. সিদ্দিকুজ্জামান সিদ্দিক নৌকা প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৬১২৪ ভোট।

৩ নং তাঁরাটি ইউনিয়নে

আওয়ামীলীগের মো. মনিরুজ্জামান মনির নৌকা প্রতিক নিয়ে ৭২০৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুল্লাহহিল মোজাহিদ মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৬২৮৪ ভোট।

৪ নং কুমারগাতা ইউনিয়নে

আওয়ামীলীগের মো. আকবর আলী নৌকা প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ১২৩০৬ ভোট ও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী আনিসুর রহমান অতুন চশমা প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৫৬১৭ ভোট।

৫নং বাঁশাঢী ইউনিয়নে

আওয়ামীলীগের উজ্জল কুমার চন্দ নৌকা প্রতিক নিয়ে ১০৯৫৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি মো. মনজুর রশিদ সরকার(আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী) চশমা প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৪১২৯ ভোট।

৬ নং মানকোন ইউনিয়নে

মো. শহিদুল ইসলাম তারা(বিএনপি স্বতন্ত্র) আনারস প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৭৯০৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি মো. সুলতান মাহমুদ ছিলু( আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী) মোটরসাইকেল প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৬৭০৪ ভোট।

৭নং ঘোগা ইউনিয়নে

আওয়ামীলীগের শরীফ আহমেদ নৌকা প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৯১১৬ ভোট ও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি মো. কামরুজ্জামান লেবু(বিএনপি বিদ্রোহী) আনারস প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৮৭৫৩ ভোট।

৮ নং দাওগাঁও ইউনিয়নে

খন্দকার মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন বাদশা(আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী) অটোরিকশা প্রতিক নিয়ে ১১২৩৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি মাওলানা আব্দুল লতিফ(বিএনপি স্বতন্ত্র) আনারস প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৭০৯৫ ভোট।

৯ নং কাশিমপুর ইউনিয়নে

আওয়ামীলীগের মো. মোয়াজ্জেম হোসেন তালুকদার নৌকা প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ১১৯৮৪ ভোট ও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি মো. ইফতেখার রসুল চৌধুরী(স্বতন্ত্র) আনারস প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ১০৩৪১ ভোট।

১০ নং খেরুয়াজানী ইউনিয়নে

মো. হারুন অর রশিদ(আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী) টেবিল ফ্যান প্রতিক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ৫১১৬ ভোট পেয়ে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আমিনুল ইসলাম (বিএনপি স্বতন্ত্র) চশমা প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৪১৭৫ ভোট।

অপরদিকে, সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জানান, সদর  উপজেলার ৫ ইউপিতে আওয়ামীলীগ ৩টিতে, স্বতন্ত্র ১ টি ও জাতীয় পার্টি একটিতে জয়ী হয়েছেন।

 

নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামীলীগের বিজয়ীরা হলেন, অষ্টধার ইউপিতে এমদাদুল হক আরমান, বোররচরে ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম সাব্বির এবং কুষ্টিয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম শামসুল হক কালু। ঘাগড়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র থেকে বিজয়ী হয়েছেন মো. সাইদুর রহমান এবং পরানগঞ্জে জাতীয় পার্টি থেকে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে বিজয়ী আবু হানিফ সরকার।

এদিকে, ত্রিশাল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আয়নাল হক জানান, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬ টিতে নৌকা, ৫ টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এবং একটি ফলাফল স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

এখানে নৌকা প্রতিক নিয়ে বিজয়ীরা হলেন, ধানীখোলার মামুনুর রশিদ সোহেল, আমিরাবাড়ীর হাবিবুর রহমান হাবিব মাস্টার, কানিহারীতে শহিদুল্লাহ মন্ডল, ত্রিশাল সদরে জাকির হোসেন, সাখুয়াতে ডা. আব্দুল আজিজ, ও বালিপাড়া ইউপিতে গোলাম আহমেদ বাদল।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ীরা হলেন, বৈলরে খন্দকার মশিউর রহমান শাহানশাহ, কাঁঠাল ইউপিতে নূরে আলম সিদ্দিকী আলম, হরিরামপুর ইউনিয়নে আবু সাঈদ, মঠবাড়ীতে আ. কুদ্দুস মন্ডল ও মোক্ষপুরে সামসুদ্দিন আহমেদ।

নির্বাচনে বড় কোন ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ভোট সম্পন্ন হলেও ভোট শেষে বেশ কয়েকটি স্থানে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন শেষে ফলাফল প্রকাশ করে ভোটের বাকস নিয়ে ফেরার পথে দায়িত্বরতদের কাজে বাঁধা দান বিশৃংখলা ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ার ঘটনাও ঘটেছে। তবে এতে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অপরদিকে ৯নং কাশিমপুর ইউনিয়নে ভোট সম্পন্ন হবার পর বিজয়ী চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগের মোয়াজ্জেম হোসেন তালুকদারের গাড়ীতে হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষ ইফতেখার রসুল চৌধুরীর। সেখানে আওয়ামীলীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন লেবুকে মারধর করারও ঘটনা ঘটেছে।