ঢাকা, রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

দীর্ঘ ৮ মাস পর ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ ট্রেন চালু হলো : সেবার মান নিয়ে যাত্রীদের অসন্তোষ!

বেনাপোল প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:০৩:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

সেবার মান কমিয়ে দীর্ঘ ৮ মাস পর বেনাপোল-ঢাকা-বেনাপোল রুটে ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ যাত্রীবাহী ট্রেনটি বৃহষ্পতিবার (২ ডিসম্বর) থেকে পুনরায় চালু হলো। করোনা ভাইরাসের কারনে গত ৫ এপ্রিল ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যায়। ট্রেনটি বেনাপোল স্টেশনের জন্য নির্ধারিত ১৮৮ যাত্রী নিয়ে দুপুর ১২.৪৫ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনের উদ্দেশ্যে বেনাপোল থেকে ছেড়ে যায়। যাত্রীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান রেল কর্মকর্তারা। এ সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক তুষার কুমার বিশ্বাস, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ও বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

যশোর অঞ্চলের মানুষের চলাচলের সুবিধার জন্য ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি উদ্বোধন করেন। সে সময় থেকেই ইন্দোনেশিয়ার তৈরী ৮৮৬ আসন বিশিষ্ট ট্রেনটি চলাচল করে আসছিল। ১২টি বগির মধ্যে কেবিনে ছিল ৪৮ আসন, এসি চেয়ার আসন ছিল ৭৮টি। বাকি ৭৬০টি নন এসি চেয়ার আসন ছিল।

কিন্তু বর্তমান যে ট্রেন দিয়ে ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ পুনরায় চালু করা হয়েছে তাতে যাত্রী সেবার মান সন্তাষজনক নয়। এখনকার ট্রেনটি ভারতের তৈরী এবং ট্রেনে কোন এসি বগি নেই। ৮টি বগিতে ৪৮টি কেবিন আসন আছে। বাকি ৭৪৫ টি নন এসি চেয়ার আসন আছে। ভাড়া নির্ধারন করা হয়েছে নন এসি চেয়ার প্রতি আসন ৪৮৫ টাকা ও কেবিন প্রতি আসন ১১১৬ টাকা। পুনরায় চালু হওয়া ট্রেনটিতে এসি আসন না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করছেন যশোরসহ বেনাপোলবাসী। 

ট্রেনের যাত্রী হাবিব চৌধুরী জানান, আমার ব্যাবসায়ীক কাজে প্রতিমাসে ৪/৫ বার ঢাকা যেতে হয়। ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ চালু হওয়ার পর থেকে আমি ঢাকায় প্লেনে না যেয়ে ট্রেনে চলাচল শুরু করি। অনেকদিন পর আজ পুনরায়  ট্রেনটি চালু হওয়ার পর ষ্টেশনে এসে ট্রেনটিতে এসি নেই শুনে অবাক হলাম। তিনি বলেন, বেনাপোলে নানা শ্রেনীর মানুষকে চাকুরি করার সুবাদে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসতে হয়। কাস্টমস ও বন্দরের অনেক কর্মকর্তারা এসি ট্রেনে চলাচল করতো। এখন এসি ট্রেন না থাকলে আগের মতোই ভোগান্তি হবে বেনাপোল-ঢাকা চলাচলকারী যাত্রীদের। এখন আবার আমার মতো যাত্রীদের ঢাকায় যেতে হলে যশোর থেকে এসি ট্রেনে উঠতে হবে অথবা বিমানে যেতে হবে। এতে আমাদের খরচ বাড়ার সাথে সাথে নানা ভোগান্তির শিকার হবো।

বেনপোল ষ্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান জানান, করোনার ভাইরাসের কারনে ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’টি দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার পুনরায় চালু হয়েছে। আগে এ রুটে যে ট্রেনটি চলতো সেটা ইন্দোনেশিয়ার তৈরী। আর এখন যেটা চলছে সেটা ভারতের তৈরী। আগের ট্রেনে এসি আসন ছিল। এখন এসি কেবিন আছে কিন্থু এসি চেয়ার আসন নেই। ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’টি পূর্বের ন্যায় সপ্তাহে ছয় দিন চলবে। ট্রেনটি বেনাপোল থেকে দুপুর ১২.৪৫ মিনিটে ছেড়ে ঝিকরগাছা, যশোর, মোবারকগজ্ঞ, কোটচাঁদপুর, দর্শনা, চুয়াডাঙ্গা, পোড়াদহ, ভেড়ামারা, ঈশ^রদি হয়ে ঢাকা কমলাপুর স্টেশনে রাত ৮.৫০ মিনিটে পৌছাবে। ওখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ছেড়ে পরের দিন সকাল ৮টায় বেনাপোল পৌছাবে। 

রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক তুষার কুমার জানান, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ রোধে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। দীর্ঘদিন পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবারও চালু হলো। এতে যাত্রীদের দূর্ভোগ অনেকাংশে লাঘব হবে।