ঢাকা, মঙ্গলবার ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নতুন মুখ: সিলেট-৫ আসনে মোস্তাক আহমদ

এমএ রহিম, সিলেট: | প্রকাশের সময় : সোমবার ৩ অক্টোবর ২০২২ ০৫:৫৮:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আরো এক বছর তিন মাস। কিন্তু এরই মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আগামীতে কোন্ দল থেকে কে মনোনয়ন পাবেন তা নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। কোন্ এলাকায় কে এমপি নির্বাচিত হলে জনস্বার্থ প্রধান্য পাবে তা নিয়েও কম আলোচনা হচ্ছে না। এই আলোচনায় উঠে আসছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামের তালিকা। স্থান পেয়েছে নতুন নেতৃত্বের নাম। 

 

সিলেট অঞ্চলও ওই আলোচনা থেকে পিছিয়ে নেই। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। এই আলোচনার মধ্য দিয়েই বের হয়ে আসছে জনবান্ধব প্রার্থীদের নাম। 

 

সিলেটের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট নিয়ে সিলেট-৫ আসন গঠিত। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য  বিশিষ্ট শিল্পপতি হাফিজ আহমদ মজুমদার। এই আসনে আওয়ামী লীগসহ বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় পার্টির একাধিক প্রার্থীর নাম আলোচনায় উঠে আসছে। 

 

স্থানীয়রা আগামী সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জনবান্ধব প্রার্থী কামনা করছেন। এই আলোচনায় স্থান পেয়েছেন সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট মোস্তাক আহমদের নাম। তৃণমূল থেকে উঠে আসা এই নেতাকে নিয়ে স্থানীয়রা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। 

 

স্থানীয়রা জানান, জকিগঞ্জের ছাত্র রাজনীতি দিয়ে এডভোকেট মোস্তাকের রাজনীতি শুরু হয়। ১৯৭৮ সালে জকিগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে সিলেট শহরে এসে মদন মোদন কলেজে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। এই কলেজে ১৯৮০ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন মোস্তাক আহমদ। দীর্ঘ ৯ বছর এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে রাজপথ কাঁপিয়েছেন তিনি। এরশাদের পতনের পর তিনি চলে যান ঢাকায়। 

 

স্থানীয়রা জানান ঢাকায় গিয়ে হাইকোর্টে যোগদান করেন একজন আইনজীবী হিসেবে। পাশপাশি তিনি নিজকে সম্পৃক্ত করেন বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদে। ১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য। সেই সঙ্গে ঢাকাস্থ সিলেট বিভাগ আইনজীবী পরিষদের সভাপতি। 

 

স্থানীয়রা এডভোকেট মোস্তাক আহমদের পাবিারিক অবস্থা তুলে ধরে বলেন, এডভোকেট মোস্তাকের চাচা আবদুল লতিফ ওই আসনে দীর্ঘদিন জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৬ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ওই আসনের এমএলএ ও এমপি ছিলেন আবদুল লতিফ। পরিবারটির জনপ্রিয়তা আজো আকাশচুম্বি। এই নির্বাচনী এলাকায় ওই পরিবারের ভোট রয়েছে ৮০ হাজারের উপরে। 

 

এলাকায় সামাজিক কর্মকান্ড সম্পর্কে বলতে গিয়ে স্থানীয়রা জানান, এডভোকেট মোস্তাক আহমদ প্রতিমাসে কমপক্ষে দুইদিন এলাকায় আসেন। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে অংশ নেন। করোনাভাইরাস দুর্যোগের সময় দিনের পর দিন তিনি এলাকায় অবস্থান করেছেন। সেসময় কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন খাদ্য সহায়তা নিয়ে। স্থাস্থ্য সামগ্রী প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে বিতরণ করেছেন। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার নানান ধরণের পদক্ষেপ নিতেন। করোনার দুই বছরের অধিকাংশ সময় তিনি এলাকায় অবস্থান নিয়ে অসহায় মানুষের জন্যে নিজকে উজার করে দিয়েছিলেন। ব্যক্তিগত তহবিল থেকে তিনি ওইসব কর্মকান্ড চালিয়েছিলেন।  

 

চলতি বছরের ভয়াবহ বন্যা শুরু হতেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এডভোকেট মোস্তাক আহমদ এলাকায় ছুটে আসেন। ঢাকাস্থ সিলেট বিভাগ আইনজীবী পরিষদের দেয়া তহবিল ও নিজের তহবিল থেকে পর্যাপ্ত অর্থ ব্যয় করে এলাকার দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ান। উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার পাশপাশি দুর্গত মানুষের পাশে ছুটে গেছেন খাদ্য সহায়তা নিয়ে। স্থানীয়দের মতে সামাজিক কর্মকান্ডে এডভোকেট মোস্তাক আহমদের দুই হাত খোলা। 

 

শনিবার দুপুরে দৈনিক বায়ান্ন থেকে যোগাযোগ করা হয় এডভোকেট মোস্তাক আহমদের সাথে। আগামী জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এলাকার উন্নয়নের জন্যে কাজ করতে হলে সংসদে যেতে হবে। এজন্য তিনি একজন সাংসদ হিসেবে সংসদে যেতে চান। তিনি জানান জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। মনোনয়ন পেলে তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন।