জায়ান্ট এগ্রো প্রসেসিং লিমিটেড ও বখতেয়ার শরীফ, তাজমিনুর রহমান, মোশারফ হোসেনের কাছে দীর্ঘদিন ধরে দখলে রাখা বন বিভাগের জমি অবশেষে দেবীগঞ্জ রেঞ্জের বন কর্মকর্তারা দখল মুক্ত করলেন।
জানা যায়, বনবিভাগের মালিকানায় থাকা জমি জানা সত্বেও সেখানে জায়ান্ট এগ্রো প্রসেসিং লিমিটেড এর পক্ষে আমিনুর রহমান, বখতেয়ার শরীফ, তাজমিনুর রহমান ও মোশারফ হোসেন চরতিস্তাপাড়া ও বালাপারা এলাকায় কোম্পানি করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পায়তারা করছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ রেঞ্জাধীন বটতলী বিটের বানিয়াপুর মৌজার এসএ ৪১১৮, ৪১৩৬, ৪১৩৭ ও ৪১৩৮ নম্বর দাগে ৩১ দশমিক ২০ একর ভূমি বন বিভাগের সরকারি গেজেটভূক্ত বনভূমি রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক গাছ রোপন করা রয়েছে। সেখানে জায়ান্ট এগ্রো প্রসেসিং লিমিটেড এর পক্ষে আমিনুর রহমান, বখতেয়ার শরীফ, তাজমিনুর রহমান ও মোশারফ হোসেন চরতিস্তাপাড়া ও বালাপারা এলাকার কিছু রাজনৈতিক ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী অসাধু লোকজনের সহযোগিতায় সিমেন্টের খুটি ও কাটাতার দিয়ে চারদিক ঘিরে ফেলে দখল করে নেন বন বিভাগের সরকারি গেজেটভুক্ত ২৭ দশমিক ২০ একর বনভূমি। জমি দখল করে সেখানে ঘর নির্মাণ করে পাহারাদারও বসিয়েছেন তারা। উপকারভোগীরা বিট কর্মকর্তা নূরুন্নবী হোসেনকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে জমি দখল করে কাটাতারের বেড়া দেয়ার বিষয়টির সত্যতা পান। পরে তিনি দেবীগঞ্জ রেঞ্জ কর্মকর্তা নিশি কান্ত মালাকারকে জানালে তিনিও ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে স্থানীয় লোকজন ও উপকারভোগীদের নিয়ে বাগানে লাগানো সিমেন্টের খুঁটি ও কাটাতারের বেড়া ভেঙে ফেলে অবৈধভাবে দখল করা বন বিভাগের জমি উদ্ধার করে দখলমুক্ত করেন।
জানা যায়, দেবীগঞ্জ রেঞ্জের বটতলী বিটের বানিয়াপুর মৌজার এস.এ খতিয়ানভুক্ত ৪টি দাগে ৩১.২০ একর জমি বন বিভাগের গেজেটভুক্ত সরকারি বনভূমি। বাংলাদেশ সরকারের গেজেট মূলে বন বিভাগ উক্ত বনভূমির মালিক। বন বিভাগের ২৭ দশমিক ২০ একর জমি বখতেয়ার শরীফ, তাজমিনুর রহমান ও মোশাররফ হোসেন তাদের নামে বিভিন্ন ভাবে প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের নামে রেকর্ড করে নেয়।
বটতলী বিট কর্মকর্তা নূরুন্নবী হোসেন জানান, জায়ান্ট এগ্রো প্রসেসিং লিমিটেড কোম্পানীর ম্যানেজার আমিনুর রহমান ও বখতেয়ার শরীফ, তাজমিনুর রহমান ও মোশাররফ হোসেন উক্ত বনভূমি ২০ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে সিমেন্টের খুঁটি ও কাটাতারের বেড়া দিয়ে দখল করে নেন। ২১ ডিসেম্বর টহলের সময় বাগানে গিয়ে জমি দখলের বিষয়টি দেখতে পাই। তখন আমি দেবীগঞ্জ রেঞ্জ কর্মকর্তাকে জানাই। দেবীগঞ্জ রেঞ্জ কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনায় ২২ ডিসেম্বর গিয়ে স্থানীয় ব্যক্তি ও উপকার ভোগীদের সহযোগিতায় কাটাতারের বেড়া ও সিমেন্টের খুঁটি ভেঙে ফেলি। পুনরায় তারা সরকারি বনভূমি জবরদখলকারী ও জায়ান্ট এগ্রো প্রসেসিং লিমিটেড কোম্পানীর পক্ষে ম্যানেজার আমিনুর রহমান তাদেরকে সাথে নিয়ে ২৫ জানুয়ারি আবার কাটাতারের বেড়া ও সিমেন্টের খুঁটি দিয়ে ঘেরাও করে চাষাবাদের চেষ্টা করে। গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরে সাথে সাথে গিয়ে কাটাতারের বেড়া ও সিমেন্টের খুঁটি ভেঙে চাষাবাদ বন্ধ করি। এ বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
দেবীগঞ্জ রেঞ্জ কর্মকর্তা নিশি কান্ত মালাকার জানান, বটতলী বিটের অধিনে বন বিভাগের ২৭ দশমিক ২০ একর জমি গত দুই দফায় বখতিয়ার শরিফ, তাজমিনুর রহমান, মোশাররফ হোসেন ও আমিনুর রহমান দখল করে সেখানে সিমেন্টের খুঁটি ও কাটাতারের বেড়া দিয়ে দেন৷ আমরা খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন ও উপকার ভোগীদের সহযোগিতা নিয়ে সিমেন্টের খুঁটি ভেঙে ফেলি আর কাটাতারের বেড়া সরিয়ে ফেলে বন বিভাগের জমি দখল মুক্ত করি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
বায়ান্ন/এসএ