ঢাকা, সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পাড়া-মহল্লার নতুন ‘বিপদ’ ব্যাটারিচালিত রিকশায় হাইড্রোলিক হর্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ২৬ মে ২০২২ ০৬:২০:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

 

রাজধানীর মিরপুর-১২ নম্বর সেকশনের মুসলিম বাজার এলাকায় মায়ের দোয়া টেলিকমের স্বত্বাধিকারী এসহাক মিয়া মোবাইল ফোনে টাকা রিচার্জ বা টাকা পাঠাতে কাগজে নম্বর লেখেন না। গ্রাহকের হাতে মোবাইল তুলে দিয়ে নম্বর তুলতে বলেন। এটি করতে গিয়ে তার বেশ কয়েকটি ফোন চুরিও গেছে।

কাগজে কেন নম্বর লেখেন না, কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা গেলো তার দোকানটি বাজার সংলগ্ন। যেখানে প্রায় সবসময়ই শত শত ইলেকট্রিক বা ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করে। যানবাহনের বিকট হর্নের কারণে স্পষ্ট করে কিছু শোনাও দুষ্কর হয়ে ওঠে।

করোনার পর ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা বেড়েছে। চারতলায় বসেও এসব হর্নের বিকট শব্দ কানে আসে। রাস্তায় নেমে মাঝে মধ্যেই হাত দিয়ে কান বন্ধ করে রাখি। এসব হর্নে যে শুধু শব্দদূষণ হচ্ছে তা নয়, প্রচুর দুর্ঘটনাও ঘটচ্ছে। তবে যাত্রীদের অনেকে নিরূপায় হয়ে ওইসব রিকশায় চড়েই গন্তব্যে যাচ্ছেন। 

এসহাক মিয়ার জবানিতেও এর সত্যতা মেলে। তিনি বলেন, এত শব্দ ঠিক করে কিছু শোনাও যায় না। কাস্টমার ‘ছয়’ বললে শুনি ‘নয়’। এভাবে অনেক কাস্টমারের সঙ্গে ঝগড়াও হয়েছে। জরিমানাও দিয়েছি। এজন্য এখন কাস্টমারের হাতেই মোবাইল ফোন তুলে দিই। কিছু মোবাইল চুরি হলেও এটাতে ঝামেলা কম।

রাজধানীর গুলশান, বনানী, বারিধারাসহ বেশ কয়েকটি অভিজাত এলাকা বাদ দিলে অন্য প্রায় সব এলাকার অবস্থা এহসান মিয়ার মিরপুরের দোকান সংলগ্ন এলাকার মতো। হাজার হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ঢাকার অলিগলি। এসবের বিকট হাইড্রোলিক হর্ন কানে পীড়া দিচ্ছে শিশুসহ পথচারীদের। এলাকাবাসী বলছেন, ঘরের ভেতরে থেকেও নিস্তার নেই। রিকশার শব্দ কানে এসে বাজছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ধরনের হাইড্রোলিক হর্ন স্বাভাবিক হর্নের চেয়ে অনেক বেশি অস্বস্তিকর, যা মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি করছে।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নিষিদ্ধ ব্যাটারিচালিত রিকশায় সয়লাব ঢাকার পথঘাট। চালকরা বলছেন, দিনের বেলা মূল সড়কে চলাচল না করতে পারলেও রাত ৯টার পর তারা রিকশা নিয়ে মূল সড়কে ওঠেন। অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করতে দেখলে আগে পুলিশ পথরোধ করলেও, এখন আর তেমন বাধার মুখে পড়তে হয় না তাদের। চালকদের দাবি, সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতেই রিকশায় হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করছেন তারা। এসব হর্নের দামও নাগালের মধ্যে।

মনিপুর এলাকার ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক মেরাজুল বলেন, এখন যারা রিকশা চালায় তাদের বেশিরভাগই অদক্ষ। দেখা যায় রাস্তায় অন্য কোনো যান বা মানুষ দেখলে আগেভাগে হর্ন দেয়। আবার চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতাও হয়। তখনও হর্ন ব্যবহার করা হয়। কেউ কেউ অকারণেও হর্ন দেন। তবে এ ধরনের হর্ন বিকট ও কানে লাগে বলে স্বীকার করেন এ রিকশাচালক।