সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার পিঠাইটিকর গ্রামের বাসিন্দা দরছ আলী(৫৫)। টানা বর্ষণ ও কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে শনিবার বিকেল থেকে অন্য সবার মতো তাঁর ঘরেও পানি ঢুকতে শুরু করে। সকালে ছিল হাঁটু সমান পানি। রাতের মধ্যে ঘরে কোমর সমান পানি জমে যায়। ঘরের আসবাবসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র উঁচু স্থানে তুলে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার উদ্দেশ্যে রাতে রওনা দেন তিনি।
দিনভর ভারী বর্ষণে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। বসতঘরে পানি ঢুকে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন পানিবন্দী মানুষেরা।
কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার পিঠাইটিকর, ভেলকোনা, সুড়িকান্দি, গয়াসী, সাইলকান্দি, সুলতানপুর, ছত্তিশ, বাঘমারা, বারোহাল, জেটিঘাট গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারের দুই শতাধিক দোকানঘরে ঢুকে পড়েছে পানি। এতে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। পূর্ব বাজার, মধ্য বাজার, পোস্ট অফিস সড়ক, থানার রোড পয়েন্টের সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারের দোকানঘরে পানি প্রবেশ করায় ব্যবসায়ীরা মালামাল সরানোর জন্য বৃষ্টির মাঝে নৌকায় তুলে নিচ্ছেন। অনেকে দোকানের মেঝেতে ইট বিছিয়ে কোনো রকমে চলাচল করছেন। হু হু করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, শুক্রবার রাতে মধ্য বাজার সড়কে ছিল হাঁটু সমান পানি। শনিবার সকালে এসে দেখি দোকানঘরে হাঁটু সমান পানি। তিনদিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। উজান থেকেও পানি নামছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ভয়াবহ বন্যা ফেঞ্চুগঞ্জেও দেখা দিতে পারে।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সীমা শারমিন বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় ১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পানিবন্দি মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম বারী বলেন, উজানে ও সিলেটে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।