ভোলায় দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বানিজ্যিক ভাবে দেশী জাতের মুরগি পালন। মুরগি পালনে লাভবান হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা। আধা নিবিড় পদ্ধতিতে এ মুরগি পালন পাল্টে দিচ্ছে তাদের ভাগ্য। এ পদ্ধতির সুফল ছড়িয়ে পড়ছে অন্য উদ্যোক্তাদের মধ্যেও।
ভোলা সদর ও দৌলতখান উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আধা নিবির পদ্ধতিতে পরিবেশ সম্মত ভাবে দেশী জাতের মুরগি পালন করা হচ্ছে। দুই উপজেলার আটশত পরিবারের মধ্যে এ পদ্ধতিতে মুরগি পালনের সুযোগ করে দিয়েছে পল্লীকর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেসনের সাসটেইনেবল এন্টার প্রাইজ প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থা। উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সময়ে পরিবেশ সম্মতভাবে দেশী মুরগী পালনের উপর বিভিন্ন প্রশিক্ষন, কারিগরি সহায়তা, বিনা মূল্যে বিভিন্ন উপকরন, যেমন একশত করে দেশী মুরগির বাচ্চা, ডিমডাড়া মুরগি, জীবানু নাশক, গামবোট, স্প্রে মেশিন,ফাস্ট এইড বক্স, জাল,সুতাও মুরগীর বাচ্চা ফোটানোর জন্য সাতটি ইনকিউবেটর মেশিন ও ওয়েস্ট কম্পোস্টিং চেম্বার দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও সংস্থার মাধ্যমে শহজ শর্তে উদ্যোক্তাদের ঋন প্রদান কার্যক্রম রয়েছে। প্রকল্পের পক্ষ থেকে এগুলো বাজারজাত করনের ব্যাবস্থা করা হয়। এ ছাড়াও উদ্যোক্তারা বাড়িতে বসেই তাদের মুরগী ও বাচ্চা বিক্রি করছে। এদের দেখে স্থানীয় অনেকেই আধা নিবিড় পদ্ধতিতে দেশী মুরগী পালন করা শুরু করেছে।
বালিয়া রাস্তার মাথা ক্ষুদ্র উদ্যোগতা নিশাত পারভিন জানান, সংস্থার মাধ্যমে প্রশিক্ষন নিয়ে শহজ শর্তে চার লাখ টাকা ঋন নিয়ে পরিবেশ সম্মত খামার গড়ে তুলেছেন। ইতেমধ্যে মুরগি ও মুরগির ডিম বিক্রি করেছেন প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকার। দৌলতখানের মধ্যজয়নগরের ক্ষুদ্র উদ্যেক্তা হাসিনা বেগম, নুরনবী জানান, সংস্থা থেকে একটি ইনকিভিউটর মেশিন ও ত্রিশটি বুলেট (ডিমপাড়া মুরগী)মুরগি পেয়ে একটি মাতৃ মুরগির খামার গড়ে তুলেছি ও প্রশিক্ষন নিয়ে বিনামূল্যে একশত দেশী মুরগির বাচ্চা পেয়েছেন, তিনি প্রায় বারো হাজার টাকার মুরগি বিক্রি করেছেন। গ্রামীন জন উন্নয়নসংস্থার প্রজেক্ট ম্যানেজার মোঃ মিজানুর রহমান জানান, তাদের কর্মীরা প্রতিটি খামারে প্রতিনিয়ত দেখশুনা করে এবং যে কোন সমস্যায় খামারিদের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। এই প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার ব্যাংকের হাট বাজারে একটি পোল্ট্রি সার্ভিস সেন্টার ও রোগ নির্নয় কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে অভিজ্ঞ ডাক্তার বিনামূল্যে সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।
গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন, জানান বিলুপ্ত প্রায় দেশী মুরগির আগে গৃহ পর্যায়ে লালন পালন হতো এখন তা দেখা যায়না তাই দেশীমুরগীর উৎপাদন ও বাজার জাত করন বৃদ্ধির লক্ষে আমরা সব ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছি। ভবিষ্যতেও থাকবে।
জেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিত কুমার মন্ডল জানান, প্রানী সম্পদের কর্মীদের পাশাপাশি গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থাও দেশী মুরগির জাতকে ধরে রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। তারা বিভিন্ন সহায়ক উপকরন ও মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করে তা বিতরন করছে এটা ভালো উদ্যোগ।