মধুমাস জৈষ্ঠ্য শেষ হলেও মৌসুমী ফলে এখনো বাজার ভরপুর। এসব মিষ্টি ফলের গন্ধের প্রতিযোগিতায় সব ফলকে পিছনে ফেলে এখন এগিয়ে জাতীয় ফল কাঁঠাল। এমন চিত্রই মিললো বগুড়ার মহাস্থান হাটে। এই হাটে বগুড়াসহ আশেপাশের জয়পুহাট, গাইবান্ধা ও রংপুর জেলা থেকে কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন হাজার হাজার কাঁঠাল আমদানি করেন। তবে এবার কাঁঠালের আমদানি অনেক কম হওয়ায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। আগে মহাস্থান হাট থেকে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ ট্রাক কাঁঠাল দক্ষিণের বিভিন্ন জেলায় পাঠাতো পাইকাররা। সে হিসেবে এবার কাঁঠালের আমদানি কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। হাট বারের আগের দিনেই পাইকাররা কাঁঠাল ক্রয় বিক্রয়ের জন্য ভিড় জমায় এই হাটে। সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এ হাটে কাঁঠাল কেনাবেচা হয়। সরেজমিনে মহাস্থান হাটে গিয়ে দেখা যায় বগুড়ার গাবতলী উপজেলার উজগ্রাম থেকে এনামুল হক অটোভ্যান যোগে ৩২ টি কাঁঠাল বিক্রি করতে এসেছে। তার ৩২টি কাঁঠালের দাম হাকানো হয়েছে ২৫৬০ টাকা। শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলার আজিজার রহমান তার গাছের বাছাইকৃত ২৭টি কাঁঠাল ২৪৩০ টাকায় বিক্রি করলেন। তরিকুল ইসলাম নামের এক পাইকার বলেন, কেবল কাঁঠালের আমদানি শুরু। তিনি প্রতিদিন ১ ট্রাক কাঁঠাল ক্রয় করে সিলেটে মোকামে পাঠান। এ হাটে আসা সবচেয়ে বড় ১৬টি কাঁঠাল তিনি ১৮০০ টাকায় কিনলেন। ভ্যানবোঝাই করে মহাস্থান হাটে কাঁঠাল নিয়ে আসা আরেক ব্যবসায়ী ফিরোজ মিয়া জানান, প্রতিদিন তারা গ্রাম-গঞ্জ থেকে কাঁঠাল সংগ্রহ করে মহাস্থান হাটে বিক্রি করে থাকেন। প্রতি পিস কাঁঠাল সাইজ অনুসারে ৮০টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকেন। মহাস্থান হাটে কাঁঠাল যাচ্ছে কুমিল্লা, সিলেট, চট্রগ্রাম লাকসাম, নোয়াখালী ও সাতক্ষীরা। এদের মধ্যে সিলেট থেকে আসা পাইকার আল আমিন জানান, এই এলাকাতে প্রচুর পরিমাণে কাঁঠালের চাষ হয়। তাই মৌসুম জুড়ে অনেক কাঁঠাল পাওয়া যায় বলে সিলেট থেকে এসে অথবা সহকারীদের মাধ্যমে ট্রাক ভর্তি করে কাঁঠাল কিনে নিয়ে যান। বগুড়া চেম্বার অব কমার্মে সদস্য ও বিশিষ্ট আড়ৎ ব্যবসায়ী, মাহিম ও মুক্তি ফল ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী রহেদুল ইসলাম জানান, দেশের দক্ষিণ অঞ্চল থেকে বেপারীরা মহাস্থানহাটে কাঁঠাল কিনতে আসেন। এরা আগের দিনে বিভিন্ন আড়ৎ, আবাসিক হোটেলে থাকেন। তারা আমাদের মাধ্যমে কমিশনে কাঁঠাল কিনে ট্রাক লোড দিয়ে মোকামে যান। মহাস্থান কাঁঠালের আমদানির কারনে আড়ৎ ব্যবসায়ী, শ্রমিক, কাঁঠাল পরিবহন অটোভ্যান ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান ঘটেছে।