যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের চাঁদপাড়ার পূর্বপাড়ায় রুহুল আমিন (১৪) কে শ্বাসরোধ ও বিদ্যুৎসক দিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে তার পিতা। এ ঘটনায় পিতাকে এলাকাবাসী ধরে পুলিশের কাছে সোর্পদ করেছে। নিহতের শরীরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের চিহ্নও রয়েছে। পুলিশ সোমবার (১৬ মে) নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পিতা নুরুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। আটক নুরুল পুলিশের কাছে ছেলেকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তবে নুরুল ইসলাম মাঝে মধ্যে মানসিক সমস্যা হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। চাঁদপাড়ার ইউপি সদস্য আক্তার হোসেন জানান, নুরুল ইসলামের দুই ছেলে এক মেয়ে। মেয়ে শ্বশুর বাড়িতে আছে। আর তার স্ত্রী সান্তনা পিতার বাড়িতে গেছেন। ছোট ছেলে স্থানীয় মাদ্রাসায় থাকে। রাতে নুরুল ইসলাম ও তার ছেলে লেদ শ্রমিক রুহুল আমিন (১৪) বাড়িতে ছিলেন। রাতে কোন এক সময় রুহুল আমিনকে হত্যা করে ঘরের মধ্যে রেখে ফেলে রাখে তার পিতা। ঘটনাটি জানতে পেরে স্থানীয়রা সোমবার ভোরে তার বাড়িতে আসে। এসময় শ্বাসরোধে ও বিদুৎস্পৃষ্টে তার ছেলেকে হত্যা করেছে বলে জানায়। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। এরপর কোতয়ালি থানার এসআই ফজলুর রহমান ও সদরের চাঁদপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের এস আই আব্দুর রহমান ঘটনাস্থলে যেয়ে ঘর থেকে রুহুল আমিনের মরদেহ উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠান। একইসাথে পিতা নুরুল ইসলামকে আটক করেন। হত্যাকান্ডের পর মানসিক ভারসাম্য হারানো অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম বলেন, ‘নিজের জমি বিক্রি করে ৪১ লাখ টাকা পরিবারের জন্য দিয়েছি। আমি এখন আর পরিশ্রম করতে পারি না। স্ত্রী সন্তান ছেলে মেয়ে আমাকে আর চায়না। এরা সবাই মিলে আমাকে সবসময় ঠিকমত খেতে দিতো না। উঠতে বসতে তারা আমাকে অমানসিক নির্যাতন চালাতো। তাই প্রথমে আমার ছেলেকে হত্যা না করে কোনো উপায় ছিলো না।’ ঘটনাস্থলে যেয়ে কোতয়ালি থানার এসআই ফজলুর রহমান জানান, আটক নুরুল ইসলাম তার ছেলেকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছেন। নিহতের গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্টের আলামত রয়েছে। ময়না তদন্তের রির্পোর্ট না পাওয়া পযন্ত আর কিছু বলা যাবে না। স্থানীয়রা জানায়, নুরুল ইসলামের অনেক সম্পত্তি ছিল। সে তার অধিকাংশ সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছে। কয়েক বছর আগে কিছু সম্পত্তি দুই ছেলের নামে লিখে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এরপর থেকে তার ছেলেকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিয়ে আসছিল। ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, ‘ঘটনার সংবাদ শুনে আমি গিয়েছিলাম। তিনি বলেন, এটি নির্মম হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে নিহতের পিতা।’যশোর কোতয়ালি মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, পারিবারিক কলেহের জের ধরে নুরুল ইসলাম, তার ছেলে রুহুল আমিনকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক পর্যায়ে জেনেছি। বিস্তারিত পরে জানা যাবে প্রকৃত পক্ষে কি হয়েছে।