শামীম মোল্লা। যাকে সবাই শ্যুটার শামীম মোল্লা বলেই জানতেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৩৯তম ব্যাচের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও সাবেক ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। গত ১৮ সেপ্টেম্বর গণপিটুনীতে আহত পরে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু বরণ করেন এই শীর্ষ ক্যাডার।
শামীম মোল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ইসলামনগর এলাকার জিনিয়া ৪ নামক ভবনের প্রথম তলায় ২০২১ সাল থেকে অবিবাহিত শামীম মোল্লা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো। তবে তিনি বাসা ভাড়া বাবদ কোন ঢাকা পরিষদ করেননি। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ওই বাসায় তিনি থাকতেন। বাড়িওয়ালী তার মৃত্যুর খবর শুনেই তার জিনিসপত্র বাইরে বের করে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে বাড়িওয়ালা শিল্পী রোজিন বলেন, ‘আমি ঐ ভবনে থাকি না। যার কারণে তার সাথে দীর্ঘদিন দেখা ও কথা হয়নি। তার কাছে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা পাওনা আছে। এখন তার জিনিসপত্র বের করে ভবনের বাইরে রেখেছি।’
তিনি আরো বলেন, যখন শামীম এখানে উঠে তখন জানতাম না তিনি একজন ক্যাডার । পরে দেখি অস্ত্র নিয়ে ঘুরে। টাকা চাইলে ভয় দেখাতেন। পরে ভয়ে তার কাছে আর টাকা চাইতে পারি নি। এখন একটু হাফ ছেড়ে বাচঁলাম।
তার পাশের ফ্ল্যাটে থাকা একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলেন, ‘কয়েকমাস হলো উঠেছি, শামীম মোল্লার সাথে কয়েকজন নিয়মিত থাকতো, তাদের সাথে দেখা হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষকও এই বাসায় আসতো’।
এছাড়াও এলাকাবাসী জানান, শামীম মোল্লার ভয়ে কেউ কথা বলতো না। এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী সে। তার এই ভাড়া বাসায় নিয়মিত মাদকের আসর বসতো। একবার তো মনসুর মাস্টার মাদকের বিরুদ্ধে কথা বললে তাকে গুলিও করেছিলো। তার ছেলেকে এই বাসায় জিম্মি করে রাখাও হয়েছিলো।
এদিকে সাভার আশুলিয়া থানায় একাধিক মামলা রয়েছে শামীম মোল্লার নামে। জুলাই মাসে ছাত্র হত্যার ৪টি মামলা আছে তার নামে। এছাড়া মাদক, জমি দখল, ছিনতাই, কিশোর গ্যাং, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে থানায় গুলির বর্ষণের মামলাও ছিলো এই শামীমের নামে। এছাড়া গত ১৫ জুলাই দিবাগত রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে হামলার অন্যতম কারিগর ছিলো এই শ্যুটার শামীম। ওই দিন প্রকাশ্যে তিনি শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালিয়েছেন।