আগামী ২৬ মার্চ থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিটিংয়ের দায়িত্ব নেবে সহজ লিমিটেড। নতুন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণের সুবিধার্থে আজ ২১ থেকে ২৫ মার্চ—এই পাঁচ দিন অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধ রাখবে রেলওয়ে। এ সময় ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে স্টেশনের কাউন্টার থেকে শতভাগ টিকিট ইস্যু করা হবে।
অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকায় বিষয়ে গত ১৪ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে।
অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকার বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, দীর্ঘদিন রেলের টিকেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করেছে সিএনএস লিমিটেড। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সহজের সঙ্গে রেলওয়ে টিকেটিং সিস্টেম পরিচালনার জন্য পাঁচ বছরের চুক্তি হয়েছে। তাঁরা ২৬ মার্চ থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের কম্পিউটারাইজড টিকিটিংয়ের কাজ শুরু করবে। তার আগে ২০ মার্চ পর্যন্ত সিএনএস লিমিটেড ট্রেনের কম্পিউটারাইজড টিকিটিং কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এরপর ২১ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত সময়ে সিএনএসের কাছ থেকে সবকিছু বাংলাদেশ রেলওয়ে বুঝে নেবে। এই সময়টাতে অনলাইন টিকিটিং কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
ম্যানুয়ালি ট্রেনের টিকিট বিক্রির সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার জানান, ‘আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি ভালো। মানুষকে আমরা সচেতন করছি, বারবার প্রচার করছি কোন দিন কোন কাউন্টারে কোন ট্রেনের টিকিট দেওয়া হবে। তা ছাড়া যাত্রীরা যাতে স্টেশনে এসে বুঝতে পারে কোন কাউন্টার থেকে কোন ট্রেনের টিকিট দেওয়া হবে তার জন্য ব্যানারও লাগিয়ে দিয়েছি। কাউন্টার অনুযায়ী ট্রেনের টিকিট ভাগ করে দিয়েছি যাতে যাত্রীদের ভিড়টা কম হয়। তবে এ সময় টিকিট কালোবাজারির কোনো সুযোগ থাকবে না। এ ব্যাপারে বড় বড় স্টেশনগুলোতে আমাদের নির্দেশনা সেইভাবে দেওয়া আছে।’
এর আগে অনলাইনে ট্রেনের ৫ দিন আগের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হতো। কিন্তু ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে দুই দিনের অগ্রিম টিকিট ইস্যু করা যাবে। এ ক্ষেত্রে সব টিকিট উন্মুক্ত থাকবে। কোনো কোটা বা আসন সংরক্ষিত থাকবে না। ফলে রোববার দেওয়া হয়েছে ২১ মার্চের অগ্রিম টিকিট, আজ ২১ মার্চ দেওয়া হবে ২২ মার্চের অগ্রিম টিকিট, ২২ মার্চ দেওয়া হবে ২৩ মার্চের টিকিট, ২৩ মার্চ দেওয়া হবে ২৪ মার্চের টিকিট এবং ২৪ মার্চ দেওয়া হবে ২৫ মার্চের অগ্রিম টিকিট এবং আগামী ২৬ মার্চ থেকে আগের নিয়মে ট্রেনের টিকিট ব্যবস্থাপনার কাজ করবে সহজ লিমিটেড।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ রেলওয়েতে ১৯৯৪ সালে কম্পিউটার ভিত্তিক টিকেটিং সিস্টেম চালু করা হয়। প্রথম পর্যায়ে ২৭টি স্টেশনে কম্পিউটারের মাধ্যমে টিকিট ইস্যু করা শুরু হয়। বর্তমানে ১০৪টি আন্তনগর ট্রেনের টিকিট ৭৭টি স্টেশনে কম্পিউটারের মাধ্যমে ইস্যু করা হচ্ছে। দৈনিক প্রায় ৯০ হাজার ও মাসিক প্রায় ২৭ লাখ যাত্রীর টিকিট কম্পিউটারের মাধ্যমে ইস্যু করা হয়। এ সকল টিকিটের ৫০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১৩ লাখ টিকিট অনলাইন/মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ইস্যু করা হচ্ছে। বর্তমানে সেন্ট্রাল সার্ভারের সঙ্গে ৭৭টি স্টেশন যুক্ত আছে যার কারণে যে কোনো গন্তব্যের টিকিট যেকোনো স্টেশন থেকে ক্রয় করা যায়। সিস্টেমটি সেন্ট্রালে কম্পিউটারাইজড সিট রিজার্ভেশন ও টিকেটিং সিস্টেম বা সিসিএসআরটিএস নামে পরিচিত।