লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার ৪নং ওয়ার্ডে অবস্থিত এলাকায় স্বাধীনতার পরে এখনো পরিবহন নেতাদের মালিকানাধীন স্থানে এখনো পৌছায় নেই আধুনিকতা ছোঁয়া ও কোনো যাত্রী ছাউনি।স্থান সংকুলান না হওয়ায় যাত্রীবাহী বাসগুলো যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। প্রখর রোদ অথবা ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে যাত্রীদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বাস গুলোরও করুন দশা সেই সময়।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-রায়পুর মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে প্রতিদিন যাতায়াত করে অসংখ্য যাত্রীবাহী বাস ও মিনিবাস। স্থান সংকুলান না হওয়ায় যাত্রীবাহী বাসগুলো ব্যস্ততম এই সড়কের সওজ ও রায়পুর থানার দেয়ালের পাশে, পেট্রোল পাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করায়। ব্যস্ততম এই সড়কে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করানোয় তীব্র যানজটেরও সৃষ্টি হয় সকালে।
এছাড়া গাড়ির জন্য যত্রতত্র দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। বিশেষ করে নারী যাত্রীদের সমস্যা হচ্ছে অনেক বেশি । বিভিন্ন দোকানপাটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাদের। বৃষ্টির পানিতে ভিজতেও দেখা যায় যাত্রীদের।
দেশের ৪২টি জেলার অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা এখন রায়পুর। বিভিন্ন কোম্পানি অন্যান্য জেলায় থাকায় চাকরি ও ব্যবসার সূত্রে দেশের প্রায় সকল জেলার মানুষ এই সড়কটি ব্যবহার করেন। রায়পুর বাসস্ট্যান্ড থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন তারা। নির্ধারিত বাসস্ট্যান্ড ও যাত্রী ছাউনি না থাকায় গাড়ির জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় এখানকার যাত্রীদের।
রায়পুর পরিবহণ খাতের সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে প্রায় ১২ হাজার সিএনজি পরিবহন রয়েছে। রায়পুর থেকে চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও চৌমুহনী সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ৮২টি আনন্দ পরিবহণের গাড়ি প্রতিদিন গাড়ি রায়পুরে ১১৫ টাকাসহ ৬৩৫ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। রায়পুর থেকে চট্টগ্রাম সড়কে ৪৭টি ও ঢাকা সড়কে ৪০ জোনাকি পরিবহণ এবং ৫০টি শাহী পরিবহণ গাড়িপ্রতি ২০ টাকা ও ৫০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। রায়পুর থেকে ঢাকা সড়কে চলাচলকারী ৩০টি ঢাকা এক্সপ্রেস বাস থেকে ১৫০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। রায়পুর থেকে কুমিল্লা সড়কে ১০টি বোগদাদ পরিবহণকে গাড়িপ্রতি ৯০ টাকা করে দিতে হয়। প্রায় ১২০টি মাইক্রো গাড়ীকে গাড়ি প্রতি চাঁদপুরে ৮০০ ও লক্ষ্মীপুরে ট্রাফিক বিভাগকে ৩০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। রায়পুর ট্রাক স্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন সড়কে চলাচলকারী প্রায় দুশতাধিক পণ্যবাহী ট্রাককে গাড়িপ্রতি ৭০/১২০ টাকা হারে চাঁদা দিতে হয়। ছোট-বড় পণ্যবাহী যান থেকে পৌরসভা কর্তৃক নির্ধারিত ১০/১৫ টাকা হারে নেয়ার নির্দেশনা থাকলেও ইজারাদাররা তাদের ছয়জন লাইনম্যানের মাধ্যমে ৪০, ৭০ ও ১২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন।
পরিবহন নেতা আন্তঃপরিবহন ঢাকা- রায়পুর মালিক সমিতির অন্যতম প্রভাবশালী তানভীর হায়দার চৌধুরী রিংকু বলেন, আমাদের সরকারি স্ট্যান্ড না থাকায় অনেক পরিবহন ও যাত্রীরা ভোগান্তিতে রয়েছে। উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মামুন ভাই ও পরিবহন মালিকদের সমিতির আওতায় টার্মিনাল নির্মিত হলেও পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নেই। টিএন্ডটি অফিসের পাশে সরকারি জায়গা পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিকতা অব্যাহত থাকলে পরিবহন সংকুলান সংকট কেটে যেয়ে দৃষ্টিনন্দন বাস - ট্রাক টার্মিনাল হতে পারে। শ্রমজীবী কর্মীরা বেকারত্ত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে।
রায়পুর পৌর মেয়র ও বেসরকারি টার্মিনাল পরিচালনা বর্তমান দায়িত্বরত গিয়াসউদ্দীন রুবেল ভাট বলেন, স্বাধীনতার এতো বছর পরেও আমরা স্থায়ী টার্মিনাল পাইনি এটি খুবই দুঃখজনক। পৌরসভার অনেক জায়গা দখল করে রেখেছে প্রভাবশালীরা।
আমরা খুব শীগ্রই যাত্রীদের ও পরিবহন এর ভোগান্তির বিষয়টি মাথায় রেখে দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থ্যা নিবো।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি রায়পুর - চট্রগ্রাম পরিবহন সমিতির সভাপতি মামুনুর রশিদ টার্মিনাল বিষয়ে বলেন, যাত্রীদের জন্য শীগ্রই একটি পাবলিক টয়লেট করার ব্যবস্থা করবো। স্ট্যান্ড এখন পৌরসভার তত্ত্বাবধানে তাই এগিয়ে আসতে হবে পৌরসভাকে আধুনিকায়নের জন্য।
লক্ষ্মীপুর-২ রায়পুর আসনের সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন রায়পুর বাসস্ট্যান্ড বিষয়ে বলেন, স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড নিয়ে পৌরসভার অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে।সমন্বিত উদ্যোগে দৃষ্টিনন্দন একটি স্থায়ী টার্মিনাল অথবা বর্তমানটি সংস্কার করে জনগনের ভোগান্তি নিরসন, পরিবহন ও চালকদের এর সুযোগ - সুবিধা নিশ্চিতের ব্যবস্থা করবো শীগ্রই।