ঢাকা, শুক্রবার ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কীটনাশক পানে স্ত্রীর মৃত্যু, ১২ ঘণ্টা পর মারা গেলেন স্বামীও

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : শনিবার ২৭ অগাস্ট ২০২২ ০৫:৪১:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

 

নাটোরের বড়াইগ্রামে ঋণের চাপে দম্পতির একসঙ্গে কীটনাশক পানে স্ত্রী মারা যাওয়ার ১২ ঘণ্টা পর স্বামীরও মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে উপজেলার বনপাড়া আমেনা হাসপাতালে স্বামী ফারুক হোসেনের (৩৫) মৃত্যু হয়। এর আগে বেলা ১১টার দিকে স্ত্রী বিথী খাতুন (২৪) মারা যান।

শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার হালদারপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় ওই দম্পতি একত্রে কীটনাশক পান করেন। নিহতরা হলেন উপজেলার বনপাড়া কালিকাপুর মহল্লার মফিজ উদ্দিনের ছেলে ফল ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন ও বিথী খাতুন।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর শরীফুন্নেছা শিরিণসহ পরিবারের লোকজন জানান, বিথী খাতুন ফল ব্যবসায়ী ফারুকের দ্বিতীয় স্ত্রী। তারা ভালোবেসে বিয়ে করেন। ব্যবসা করতে গিয়ে ফারুক বিভিন্ন সমিতি ও মহাজনদের কাছ থেকে উচ্চ সুদে ১০ লক্ষাধিক টাকা ঋণ নেন। এই টাকা পরিশোধ নিয়ে তারা দুচিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ফারুক কীটনাশক পানে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেন। বিষয়টি স্ত্রীকে জানালে তিনিও স্বামীর সঙ্গে বিষপানের কথা জানান।

শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ফারুক কীটনাশক পানের পর পরই স্ত্রী বিথীও একই কাজ করেন। পরে পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে বিথীর মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফারুককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রামেকের আইসিইউতে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে সক্ষম না হলে রাত ৯টার দিকে তাকে ফিরিয়ে এনে বনপাড়া আমেনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানে রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

বনপাড়া পৌর মেয়র কে এম জাকির হোসেন বলেন, ফারুক হোসেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী বিথী পারভীনকে নিয়ে হালদারপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। সেখানেই তারা একসঙ্গে কীটনাশক পান করেন। পরে তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বনপাড়া ক্লিনিকে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তির পরেই কর্তব্যরত চিকিৎসক বিথীকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ফারুক হোসেন এবং বিথী পারভীন উভয়ে খালি পেটে দানাদার জাতীয় কীটনাশক খেয়েছিলেন। যার ফলে তাদের মৃত্যু হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক বলেন, ঋণের দায়ে তারা অনেকটাই বিধ্বস্ত ছিল। উপায়ন্তর না দেখে তারা একসঙ্গে কীটনাশক পানে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

ওসি আরও বলেন, শুক্রবার বিকেলে ময়নাতদন্তের পর রাত ১১টার দিকে বিথীর মরদেহ দাফন করা হয়েছে। শনিবার সকালে ফারুকের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় দুইটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।