ঝিনাইদহের শৈলকুপায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয়পক্ষের ৪০ বাড়িতে হামলা, ২৫ জন আহত ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
সোমবার (৮ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে উপজেলার ১২ নম্বর নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়নের শেখরা গ্রামে এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক বর্তমান চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন বিশ্বাস ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা ফারুক বিশ্বাসের সমর্থকদের মধ্যে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
বর্তমান চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন বিশ্বাসের সমর্থকরা অভিযোগ করেন সাবেক চেয়ারম্যান ফারুকের সমর্থকরা এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায়। তবে ফারুকের সমর্থকরা এ অভিযোগ অস্বীকার করে।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘ দিন ধরে ১২ নম্বর নিত্যানন্দনপুর ইউনয়নের বতর্মান চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন বিশ্বাস ও সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক বিশ্বাসের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। গত রোববার সন্ধ্যায় মাখন নামে ফারুক সমর্থক এক ব্যক্তিকে মফিজ সমর্থকের লোকেরা মারধর করলে এ ঘটনায় সোমবার সকালে উভয় গ্রুপের সমর্থকরা ঢাল, রামদা ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে শেখরা গ্রামে ৪০ বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায়। এতে কাশেম আলী মো: আতাহার, আজিজুল ইসলাম,শহিদুল ইসলাম, ফরিদুল ইসলাম, মো: তুহিন, মো: শহীদ, মো: সবুজ, ইয়াসিন, সুজন আশরাফুল, নিশান, রাসেল, সোহাগ, মাজেদুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, বাবলুসহ উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়। এর মধ্যে মাজেদুল ইসলামের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তাহিরুল ইসলাম, মধু বিশ্বাস, রেজাউল, শহীদ বিশ্বাস, রাজ্জাক বিশ্বাস, মনিরুল, কালাম মিয়া, রাজ্জাক মণ্ডল, আতিয়ার, মিজান মণ্ডল, বশির উদ্দিন, ওবাইদুল, মোশারফ, রফি মণ্ডল, সালাম বিশ্বাস, হবিবর শেখ, মোজাম শেখ সাইফুল ইসলাম, শাহীন শাহাদত হোসেনসহ উভয় গ্রুপের ৪০টি বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট হয়।
মফিজ উদ্দিন বিশ্বাসের সমর্থক শেখরা গ্রামের আয়শা খাতুন অভিযোগ করেন, ফারুক-সমর্থক শতাধিক ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
বর্তমান চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন বিশ্বাস অভিযোগ করেন ইউপি নির্বাচনে পরাজিত হয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক বিশ্বাস বারবার তার সমর্থকদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালাচ্ছে।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক বিশ্বাস বলেন, ইউপি নির্বাচনে তিনি পরাজিত হওয়ার পর থেকে তিনি ও তার সমর্থকরা এলাকায় থাকতে পারছেন না। বর্তমান চেয়ারম্যান মফিজ সমর্থকরা নিজেরা নিজেদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চালিয়ে তার ওপর দোষ চাপাচ্ছেন বলে জানান।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, শেখরা গ্রামে ভাঙচুরের ঘটনায় সাথে সাথে তিনি সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছেন এবং এলাকায় টহল অব্যাহত রেখেছেন। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ২ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। তবে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।