টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে তাঁতের শাড়ীর পাশাপাশী দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে শাল চাদর। তাঁতে তৈরী বাহারী ডিজাইন আর নিপুন কারুকার্য্যে আর্কষণীয় শীতের পোষাক শাল-চাদর প্রায় সব বয়সের নারী-পুরুষের পছন্দ। শাল তৈরীর কর্মযজ্ঞে এখন মহাব্যস্ত এ শিল্পের সাথে জড়িত মালিক-শ্রমিকরা। তাঁতে তৈরী এসব শাল-চাদর শীতের শুরুতেই পৌছে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার রুমগুলোতে।
হেমন্তেই শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। হিমেল ঠান্ডা বাতাসে শরীর গরম রাখতে সব বয়সী মানুষের প্রয়োজন শীতের পোষাক। শীতে সব বয়সী নারী-পুরুষের মনে স্থান করে নিয়েছে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার আবাদপুর গ্রামের তাঁতে তৈরী শাল-চাদর। এ অঞ্চলের শাল-চাদরের বৈশিষ্ট্য হল বাহারি রঙের সুতা দিয়ে হাত ও তাঁতকলে আর্কষণীয় ডিজাইনের কারুকার্যে তৈরি করা হয়। দুই/আড়াই হাত প্রস্থ এবং চার/পাঁচ হাত দৈর্ঘ্যে তৈরি হয় শাল চাদর। বর্তমানে ফ্যাশান উপযোগী করে এ শাল-চাদর তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান কারিগররা। এছাড়া জেলার বাসাইল, কালিহাতী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন তাঁতপল্লীতেও শাল-চাদর তৈরি হয়। এ অঞ্চলের সহস্রাধিক পরিবার শাল-চাদর তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
তাঁত মালিক-শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সারা বছর শাড়ীর পাশাপাশি শাল-চাদর তৈরী করলেও হেমন্তের শুরুর আগ থেকে মধ্য শীত পর্যন্ত তারা বেশী পরিমানে শাল-চাদর তৈরী করেন। তাঁত শ্রমিকরা জানান, একজন শ্রমিক দিনে ৩/৪ টা শাল-চাদর তৈরী করেন। এতে যা মুজুরী পান তাতে কোন রকমে তাদের সংসার চলে।
তাঁত মালিকরা জানান, সুতাসহ অন্যান্য উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির কারণে তাদের শাল-চাদর তৈরীর প্রধান প্রতিবন্ধকতা। অল্প পুঁজি নিয়ে তারা শাল-চাদর তৈরী করছেন। এ অঞ্চলে তৈরী ফ্যাশনেবল শাল-চাদর ইতিমধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চলে গেছে বিক্রির জন্য।
টাঙ্গাইল তাঁত বোর্ডের লিয়াজোঁ অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, তাঁতে তৈরী শাড়ির পাশাপাশি শাল-চাদর শিল্পটির সম্প্রসারণের জন্য কাজ করছে জেলা তাঁত বোর্ড। এমনটাই জানায়িছেন এই কর্মকর্তা। সুষ্ঠ বাজার ব্যবস্থাপনা, সরকারী-বেসরকারী প্রনোদনার পরিধি আরো বাড়ানো এবং সরকারীভাবে শীত প্রধান দেশগুলোতে ব্যাপকহারে শাল-চাদর রফতানীর উদ্যোগ নেয়া গেলে আরো অনেকদূর এগিয়ে যাবে এ শিল্প।