টাঙ্গাইলের বাসাইলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখে বাসাইল-পাথড়ঘাটা সড়ক নির্মাণে সময়মতো পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এতে উপজেলার পূর্বপৌলী গ্রামের শত শত একর জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে তিন বছর ধরে রবিশস্য আবাদ করতে পারছেন না চাষিরা। এতে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের পূর্বপৌলী গ্রাম। এ গ্রামটি কৃষির উপর নির্ভরশীল। ফলে গ্রামবাসীর আয়ের বড় একটি অংশ আসে কৃষি ফসল থেকে। তবে তিন বছর আগে গ্রামের দক্ষিণ পাশ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে বাসাইল-পাথড়ঘাটা সড়ক। এ সড়ক নির্মাণের ফলে সময়মতো পানি নিষ্কাশনে ব্যাহত হচ্ছে। এতে বরিশস্যের চাষাবাদ করতে পারছেন না কৃষকরা।
জানা যায়, সড়ক নির্মাণের আগে পানি নিষ্কাশনে জন্য একটি কালভার্ট ছিল। তখন যথাসময়ে পানি নিষ্কাশন হতো। মাঠে ৬০০ থেকে ৭০০ একর জমিতে সরিষার আবাদ হতো। কিন্তু সড়ক নির্মাণের সময় সেই কালভার্ট ভেঙে ফেলা হয়। পরে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করেই সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হয়। জমিতে পানি থাকায় বারো আবাদের জন্য বীজতলাও তৈরি করতে পারছেন না কৃষকরা। এমনকি ধান কাটার আগেই বৃষ্টি হলে। জমিতে পানি জমে থাকে। এর ফলে ফসলের ক্ষতি হয়। পানি জমে থাকায় মাঠে কচুরিপানায় ছেয়ে গেছে। এ ছাড়া ব্রাহ্মণপাড়িল-ছুনকাপাড়ার মধ্যবর্তী এলাকায় প্রায় দেড়’শ একর জমি পানিতে ডুবে রয়েছে। ফলে এই জমিতেও রবিফসল চাষাবাদ করতে পারছেন না কৃষকরা।
পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা করতে ভুক্তভোগী কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত আবেদনও করেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন কৃষকরা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেন বলেন, পূর্বপৌলী মৌজার শত শত একর জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি কালভার্ট ছিল। কিন্তু সড়ক নির্মাণের সময় সেটি ভেঙে ফেলা হয়। ফলে কৃষকের এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পানি জমে থাকায় রবিশস্য আবাদ করতে পারছেন না কৃষকরা। এমনকি বোরো মৌসুমের জন্য ধানের বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না কৃষকরা।
কৃষক আব্দুল গনি মিয়া, হাছেন মিয়া, ইসমাইল হোসেন, গণেশচন্দ্র মণ্ডলসহ অর্ধশতাধিক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, পূর্বপৌলী মৌজায় প্রায় সাত’শ একর কৃষি জমিতে পানি জমে থাকায় জমি অনাবাদি পড়ে রয়েছে। তাই আমরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত ভাবে একটি আবেদন দিয়েছি।
কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ খান বলেন, এভাবে চলতে থাকলে এলাকার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই দ্রুত এখানে একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে দুই দিন উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অফিসের বাইরে আছেন বলে ফোন কেটে দেন।
বাসাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম বলেন, বিষয়টি এত দিন আমাকে কেউ জানাননি। স্থায়ীভাবে পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা পারভীন বলেন, ‘আমি সবে মাত্র যোগ দিয়েছি। বিষয়টি দেখে আলাপ-আলোচনা করে অবশ্যই সুরাহা করার ব্যবস্থা করা হবে।